কেন্দ্র সরকার তিনটি বৃহত্তর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক – ইউকো ব্যাঙ্ক, পঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাঙ্ক এবং ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্কের অংশীদারিত্ব বিক্রির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই সিদ্ধান্ত বাজারের নিয়ম মেনে নেওয়া হবে এবং SEBI-এর ন্যূনতম পাবলিক শেয়ার হোল্ডিং নীতি পূরণ করতেই নেওয়া হয়েছে। তবে এতে গ্রাহকদের উপর কোন রকম প্রভাব পড়বে না বলেই আশ্বাস দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
বর্তমানে এই তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ৯৫ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ার রয়েছে কেন্দ্র সরকারের হাতে। SEBI-এর নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোন তালিকাভুক্ত কোম্পানির কমপক্ষে ২৫ শতাংশ শেয়ার পাবলিকের হাতে থাকা বাধ্যতামূলক। এই নিয়ম পূরণ করতেই সরকার তার শেয়ারের কিছুটা অংশ বিক্রি করে দিচ্ছে।
এটি মূলত পাবলিক শেয়ার হোল্ডিং বাড়ানোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর বাজার মূল্যায়ন এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সরকারের একটি বড় পদক্ষেপ। তবে সরকারের এই শেয়ার বিক্রি পুরোপুরি বাজার পরিস্থিতির উপর নির্ভর করেই করা হবে।
কীভাবে হবে শেয়ার বিক্রি?
এই শেয়ার বিক্রি করার জন্য কেন্দ্র সরকার কয়েকটি ধাপ অবলম্বন করবে। সেগুলি হল-
- কোয়ালিফায়েড ইনস্টিটিউশনাল প্লেসমেন্ট (QIP)- ব্যাংকগুলি বাজার পরিস্থিতি নির্বাচন করে ২০২৬ অর্থবর্ষের মধ্যে কোয়ালিফায়েড ইনস্টিটিউশনাল প্লেসমেন্টের মাধ্যমে শেয়ার বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
- ইকুইটি মূল্যায়ন- ব্যাংকগুলিকে শেয়ার বিক্রি করার আগে তাদের সঠিক পথে ইকুইটি মূল্যায়ন করতে হবে।
- শেয়ার বিক্রির পরিমাণ- একটি সংবাদপত্রের দাবি অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে ৫ থেকে ১০ শতাংশ শেয়ার ছাড়া হবে। পরে বেশি শেয়ার বিক্রি করার পরিকল্পনা করা হতে পারে।
শেয়ার হোল্ডিং-এর বর্তমান অবস্থা
- বর্তমানে ইউকো ব্যাঙ্কের ৯৫.৩৯% শেয়ার সরকারের হাতে রয়েছে।
- পাঞ্জাব এন্ড সিন্ধ ব্যাঙ্কের ৯৮.৫% শেয়ার সরকারের হাতে রয়েছে।
- ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্কের ৯৬.৩৮% শেয়ার সরকারের হাতে রয়েছে।
গ্রাহকদের উপর প্রভাব
সরকার এই শেয়ার বিক্রি করে দিলেও আশ্বাস দিয়েছে যে, শেয়ার বিক্রি শুধুমাত্র একটি প্রশাসনিক পদক্ষেপ। পাবলিক শেয়ারিং বাড়ানোর ফলে ব্যাংকগুলি তাদের কাজের স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতা ফিরিয়ে আনবে, যা গ্রাহকদের আরো উন্নত পরিষেবা প্রদান করতে সাহায্য হবে। এই পদক্ষেপ বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করবে এবং ব্যাঙ্কের মূলধন বৃদ্ধি করতে আরও সাহায্য করবে।
সরকারের এই পদক্ষেপ ব্যাঙ্কের বাজার মূল্য বাড়াবে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা প্রদান করতে সহায়ক হবে। যদিও এটি প্রশাসনিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ, তবে গ্রাহকদের উপর কোন রকম নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে সরকার আশ্বাস দিয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে ব্যাঙ্কিং খাতে একটি শক্তিশালী এবং স্বচ্ছ ব্যবস্থা তৈরি করা যাবে।