বর্ষা মানে যেন এক প্রকার আতঙ্ক। নদীতে নামে ভাঙ্গন। আর এই দুঃস্বপ্ন বছরের পর বছর তাড়া করছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের সুবর্ণরেখা নদীর তীরবর্তী মানুষদের। অবশেষে সেই আতঙ্কের ইতি টানতে চলেছে রাজ্য সরকার (WB Government)। প্রায় ৭ কোটি টাকা খরচ করে সুবর্ণরেখার ভয়ঙ্কর রূপের বিরুদ্ধে তৈরি করছে এক নতুন রক্ষা কবচ।
সুত্রের খবর, সম্প্রতি মেদিনীপুরে অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক বৈঠকে নদী প্রতিরক্ষা প্রজেক্টের উদ্বোধন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই উদ্বোধনের মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী জানায়, নদী পাড়ে বসবাসকারী সাধারণ মানুষের ঘুম যেন আর কেড়ে না নেওয়া হয়। প্রকৃত অর্থে এটি শুধুমাত্র একটি প্রকল্প নয়, বরং মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে সাধারণ মানুষের জন্য প্রতিশ্রুতি।
কোথায়, কতদূর কাজ হয়েছে?
বেশ কিছু সূত্রের খবর, এই প্রকল্পের আওতায় দাঁতন ১ নম্বর ব্লকের বেলমুলা এলাকায় প্রায় দেড় কিলোমিটার নদী পার বাঁধাইয়ের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। সুবর্ণরেখা নদী, যা সারা বছর শান্ত থাকলেও বর্ষায় প্রবল আকার ধারণ করে। তার ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতেই এই বিশেষ পদক্ষেপ।
সূত্র বলছে, এই প্রকল্পে ব্যবহার করা হয়েছে শক্তপোক্ত পাথরের স্তর, তারজালির নেট এবং অন্যান্য প্রযুক্তি নির্ভর সমস্ত সরঞ্জাম। আর এই আধুনিক পদ্ধতিতে নদীর পারে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। এতে স্রোতের ধাক্কায় মাটি ধ্বসও রোধ করা যাবে।
কৃষি জমি এবং বসতির জন্য় যেন আশীর্বাদ
প্রকল্পের আগে স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কায় আশঙ্কায় দিন কাটাতো। নদীর ধার ঘেঁষে থাকা চাষীদের জমি বা বসতি, সবই ছিল বিপদের মুখে। প্রতিবারই নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত হতেন এলাকায় সাধারণ মানুষ। তবে এবার সেই ছবিটা বদলাতে চলেছে। সরকারিভাবে বাঁধ তৈরি হওয়ার ফলে বর্ষায় তাদের আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না, তা আশা করা যাচ্ছে।
রাজ্য সীমান্তের প্রতিরক্ষার নয়া নিদর্শন
এদিকে জানিয়ে রাখি, দাঁতনের একদম শেষ প্রান্তেই শুরু হয় উড়িষ্যা রাজ্য। অর্থাৎ রাজ্যের সীমানার দিক থেকেও এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ। নদীর তীরের এই বাঁধ শুধুমাত্র মেদিনীপুর নয়, বরং পরোক্ষভাবে উড়িষ্যার একাংশও এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে।