যারা সরকারি চাকরি করেন, তাদের জন্য নতুন বছরে বেতন বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তবে কার্যত সেই আশায় আবার জল ঢেলে দিল কেন্দ্র। হ্যাঁ, বহু প্রত্যাশের পর কেন্দ্রীয় সরকার ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের ঘোষণা করেছিল অষ্টম বেতন কমিশন (Eighth Pay Commission) গঠিত হওয়ার। কর্মচারীদের আশা ছিল, ১০ বছর পর ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে তারা বেতন বৃদ্ধির সুবিধা পাবে। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে বহু দেরি।
এখনো সম্পূর্ণ হয়নি কমিশন গঠন
সরকার ঘোষণা করলেও বাস্তবে এখনো অষ্টম বেতন কমিশনের কাজ শুরু হয়নি। জানা যাচ্ছে, কমিশনের কোন চেয়ারম্যানও নেই। পাশাপাশি নেই কোন সদস্য বা সচিব স্তরের আধিকারিক। অর্থাৎ, অষ্টম বেতন কমিশনের পূর্ণ গঠন এখনো হয়নি।
আর এমনটাই জানানো হয়েছে লোকসভার এক প্রশ্নের উত্তরে। যেখানে অর্থমন্ত্রী নির্মল সীতারমন স্বীকার করেছেন যে, কমিশন গঠনের ঘোষণার দেওয়া হলেও এখনো পর্যন্ত Terms of Reference বা রিপোর্ট দেওয়ার কোন সময় সীমা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।
রিপোর্ট পেতে কত সময় লাগতে পারে?
অর্থ মন্ত্রকের ব্যয় সচিব মনোজ গোয়েল জানিয়েছেন, যদি ২০২৫ সালের মার্চ মাসে কমিশন গঠন সম্পন্ন হয়, তাহলে রিপোর্ট জমা দিতে দিতে ২০২৬ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত লাগতে পারে। অর্থাৎ ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
এই সময়ের মধ্যে কমিশনের দায়িত্ব হবে বিভিন্ন মন্ত্রক, কর্মচারী ইউনিয়ন এবং পেনশনভুক্ত গোষ্ঠীর মতামতগুলিকে সংগ্রহ করা এবং সমস্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে বিস্তারিত রিপোর্ট প্রস্তুত করা। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, সপ্তম বেতন কমিশন তৈরি করতে প্রায় ১৮ মাস সময় লেগেছিল।
২০২৫-২৬ বাজেটে থাকছে না বেতন বৃদ্ধির টাকা
সুত্র বলছে, বাজেট প্রস্তুতির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে কোন pay hike provision রাখা হয়নি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে। হ্যাঁ, এমনটাই জানা যাচ্ছে। কারণ সরকার জানে যে, রিপোর্ট আসতে অনেকটাই সময় লাগবে এবং বাস্তবায়ন হতে তো আরো সময় লাগবে।
সপ্তম বেতন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে কবে?
সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশগুলি ২০১৬ সাল থেকে চালু হয়েছে এবং এর কার্যকারিতা ২০২৬ সাল পর্যন্ত। সাধারণত প্রতি ১০ বছর অন্তর নতুন বেতন কমিশন গঠিত হয়। তবে তার রিপোর্টিং ও বাস্তবায়নের ধাপ এগোতে এখনও কিছুটা বিলম্ব রয়েছে।
এখন ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হবে, এই আশা আপাতত সরকারি কর্মচারীদের ভুলে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কারণ নতুন বেতন কমিশন গঠিত হওয়ার জন্য এখনো দিন গুনতে হবে।