প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-মন্ত্রীর বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনা খুব সাধারণ হয়ে গিয়েছে আম জনতার কাছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আইনের রক্ষাকারী বিচারকের (Justice Yashwant Varma) বাড়ি থেকে টাকার পাহাড় উদ্ধারের মত ঘটনা সত্যিই তাক লাগিয়ে দিয়েছে দেশবাসীকে। গত বুধবার দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে টাকার পাহাড়। কিন্তু এই অভিযোগ সামনে আসার পর বিচারপতির শুধুমাত্র বদলি করার উপর জোর দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে ঘিরে বেশ শোরগোল পরে গিয়েছে। আর এই আবহেই উঠে এল আরেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
বিচারপতির বিরুদ্ধে FIR!
২০১৮ সালে সিম্ভাওলি চিনিকল সংস্থার বিরুদ্ধে ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অফ কমার্স প্রতারণার অভিযোগে করে ১২ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI। সেই সময় ওই সংস্থার কর্তা ছিলেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মা। তিনিও ছিলেন ফির করা অভিযুক্তের তালিকায়। অভিযোগে জানানো হয়েছিল যে, ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে ওবিসির হাপুর শাখা ৫,৭৬২ জন কৃষককে ১৪৯.৫৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল। এবং ঋণের চুক্তি মেনে কৃষকদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে দেওয়ার আগে ওই ঋণের টাকা তৃতীয় পার্টির অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছিল। সিম্ভাওলি চিনিকল জানিয়েছিল যে কৃষকদের হয়ে তারাই ঋণ পরিশোধ করবে। কিন্তু ব্যাঙ্ককে সিম্ভাওলি চিনিকল ভুয়ো KYC নথি জমা করেছিল।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই বন্ধ হয়ে তদন্ত
২০১৫ সালের মার্চে ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অফ কমার্স ঘোষণা করে যে, ওই ঋণ ‘ভুয়ো’ ছিল। তারা ৯৭.৮৫ কোটি টাকা খুইয়েছে এবং তাদের বকেয়া অর্থের পরিমাণ ছিল ১০৯.০৮ কোটি টাকা। এরপর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এলাহাবাদ হাই কোর্ট চিনিকলের ‘ঋণ প্রতারণা’-র ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সাতটি ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত করার নির্দেশ দেয় সিবিআইকে। উচ্চ আদালতের তরফে জানানো হয়, এই আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে রয়েছে বেশ কয়েক জন ব্যাঙ্ক আধিকারিক। ওই সংস্থাকে ৯০০ কোটি টাকা ঋণ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ওই আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় নতুন করে তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI। কিন্তু পরের মাসেই এই বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। এবং হাই কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। এবং সেখানেই ধামাচাপা পরে যায় এই ঘটনা। আর আজ এতদিন পড়ে সেই ঘটনা ফের ফিরে এল।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
সুপ্রিম কোর্টের বিবৃতি
এদিকে গত ১৪ মার্চ দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাসভবনের স্টোররুমে পোড়া চটের থলেতে নগদ পড়ে থাকার ভিডিও করে দিল্লি পুলিশ সরকার এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির হাতে তুলে দিয়েছে। সবটা দেখার পর এর পরেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু তার মাঝেই মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে বিচারপতি যশবন্ত বর্মার এলাহাবাদের বদলির নির্দেশ। প্রশ্ন ওঠে একাধিক। কিন্তু সমস্ত ধোঁয়াশার মাঝেই গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট এক বিবৃতি প্রকাশ করে। যেখানে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় যে, বিচারপতি বর্মাকে বদলি এখনও করা হয়নি। সুতরাং তাঁকে বদলির প্রস্তাবের সঙ্গে তদন্তের কোনও যোগ নেই।