সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: নিজের স্বার্থসিদ্ধি করার জন্য মানুষের বিশ্বাস নিয়ে খেলতে এখন যেন পিছপা হন না প্রতারকরা। হ্যাঁ, এবার এমন এক কান্ড ঘটেছে, যা একেবারে সিনেমার গল্পকেও হার মানিয়ে দিয়েছে। সরকারি স্কুলের একাধিক শিক্ষিকাকে বিয়ে করে তাদের নামে লক্ষ লক্ষ টাকার ঋণ তুলে চম্পট গিয়েছে এক যুবক। তাও আবার ১ বা ২ জনকে নয়, একবারে ৯ জন শিক্ষিকাকে বিয়ে করে প্রতারণা করেছে ওই যুবক।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
নিখোঁজের অভিযোগে তদন্ত
আসল ঘটনাটি সামনে আসে উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্রে (Sonbhadra Case)। সম্প্রতি এক শিক্ষিকা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তিনি জানান যে, তার স্বামী আচমকা নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন। খোঁজাখুঁজি করে কোন হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে না, এখানেই শেষ নয়। ওই শিক্ষিকা আরো জানান যে, তার নামে ব্যাঙ্ক থেকে ৪১ লক্ষ টাকার ঋণ নেওয়া হয়েছে, যা তিনি কিছুই জানেন না। অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্ত নামে পুলিশ।
একজন নয়, বরং নয়জন স্ত্রী
পুলিশ যত তদন্ত শুরু করে, ততই সামনে আসতে থাকে একের পর এক চমকপ্রদ তথ্য। তদন্ত নেমে পুলিশ জানতে পারে যে, নিখোঁজ ব্যাক্তি সাধারণ একজন মানুষ নয়। বরং এক ভয়ানক প্রতারক। তিনি শুধু একজনকে নয়, বরং নয়জন শিক্ষিকাকে বিয়ে করেছেন এবং প্রত্যেক শিক্ষিকার নামেই ব্যাঙ্ক থেকে মোটা অঙ্গের ঋণ তুলেছেন।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
অভিযুক্ত যুবক স্কুলের শিক্ষিকাদের কাছে বিয়ের জন্যে নিজেকে এক বড় সংস্থার উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলে পরিচয় দিতেন। নাম বলতেন রাজন গহলৌত। তার ব্যক্তিত্ব এবং মিথ্যা সাজানো গল্প শুনে বিশ্বাস করে ফেলত সরকারি স্কুলের শিক্ষিকারা। এরপর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে তাদেরকে বিয়ে করতেন এবং সংসার করার নামে এইভাবে নাটক চালাতেন।
কীভাবে চালাত প্রতারণা?
আসলে বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই তিনি শিক্ষিকাদের ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে নিত। কখনো ব্যক্তিগত সমস্যার কথা বলে আবার কখনো ভবিষ্যতে নিরাপত্তার অজুহাত দিয়ে তাঁদের নাম করে তিনি ব্যাংক থেকে ২০ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ তুলেছিল। আর একবার মোটা অঙ্কের টাকা হাতে পেয়েই নতুন শহরে পাড়ি জমাতো এবং খুঁজতে শুরু করতো পরবর্তী শিকার।
কীভাবে ফাঁস হল?
সোনভদ্রের শিক্ষিকার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেই ধাপে ধাপে আসতে থাকে তার অপরাধ। তার প্রতারণার শিকার হওয়া আরো আটজন শিক্ষিকা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। বর্তমানে পুলিশ অভিযুক্তের খোঁজে বিভিন্ন রাজ্যে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। আর এই ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের বিশেষ সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এখন দেখার, এই প্রতারক অবশেষে আইনের জালে ধরা পড়ে নাকি গা ঢাকা দিয়ে থাকে।