সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মনের মধ্যে এখন একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে যে, সপ্তম বেতন কমিশন (7th Pay Commission) কবে চালু করা হবে? আসলে এটাই স্বাভাবিক। কারণ কেন্দ্র সরকার ইতিমধ্যে অষ্টম বেতন কমিশনের ঘোষণা করে দিয়েছে। অথচ রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা এখনো ষষ্ঠ বেতন কমিশনের অধীনে পড়ে রয়েছেন। কার্যত এই বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে কর্মচারী মহলে প্রবল জল্পনা চলছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
পশ্চিমবঙ্গের বেতন কমিশনের ইতিহাস
বাংলার সরকারি কর্মচারীদের বেতন নির্ধারণের জন্য প্রথমবার ১৯৭১ সালে বেতন কমিশন গঠন করা হয়েছিল। এরপর ১৯৮১, ১৯৯০, ১৯৯৮ এবং ২০০৯ সালে যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম বেতন কমিশন গঠিত হয়েছিল সরকারি কর্মচারীদের জন্য। এদিকে ২০২০ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে ষষ্ঠ বেতন কমিশন কার্যকর করা হয় রাজ্যে, যার আওতায় এখন কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন।
এই কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, বর্তমানে রাজ্যের কর্মচারীরা মাত্র ১৪% হারে মহার্ঘ ভাতা পাচ্ছেন। তবে ২০২৫ সালের বাজেটে ৪% DA বাড়ানো হয়েছে, যা আগামী এপ্রিল মাস থেকে কার্যকর হয়ে ১৮% হতে চলেছে। তবে কেন্দ্রের সঙ্গে তুলনা করলে এই হার অনেকটাই কম।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
সপ্তম বেতন কমিশন নিয়ে কী ভাবছে রাজ্য?
চলতি বছরের বাজেটে রাজ্য সরকার সামান্য ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করলেও সপ্তম বেতন কমিশন নিয়ে কোনরকম মুখ খোলেনি। তবে সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি লাগাতার দাবি জানিয়ে চলেছে নতুন বেতন কমিশন গঠন করার জন্য। বেশ কিছু সূত্র বলছে, কর্মচারীরা আশা করছে ২০২৬ সালের আগে সপ্তম বেতন কমিশন নিয়ে কোনও বড়সড় ঘোষণা আসতে পারে।
কেন্দ্রের তুলনায় রাজ্যের অবস্থা
বর্তমানে আমরা যদি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের দিকে তাকাই, তাহলে তারা সপ্তম বেতন কমিশনের আওতায় রয়েছেন এবং বর্তমানে ৫৩% হারে মহার্ঘ ভাতা পাচ্ছেন। শোনা যাচ্ছে, ২০২৬ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে তারা অষ্টম বেতন কমিশনের আওতায় আসবেন। ফলে তাদের বেতন আরো উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে। এমতাবস্থায় রাজ্যের কর্মচারীদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ সরকার যেন দ্রুত সপ্তম বেতন কমিশন গঠন করে এবং তারা কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের থেকে খুব একটা পিছিয়ে না থাকে।
ভবিষ্যৎ কী হবে?
রাজ্যের বেতন কমিশন গঠনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই, প্রত্যেকবার কেন্দ্র সরকারের তুলনায় বেশ কয়েক বছর পর রাজ্যের নতুন বেতন কমিশন গঠিত হয়েছে। এবারও কি একই ধারা বজায় থাকবে? নাকি সরকার কর্মচারীদের স্বার্থে দ্রুত কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে? এই প্রশ্নের উত্তর সময় আসলে বলা যাবে। তবে এরকম ভাবে চলতে থাকলে রাজ্যের কর্মচারীরা পথে নামতে কার্যত প্রস্তুত।