বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: রাতের অন্ধকারে দেদার বালি পাচার চলছে রাজ্য জুড়ে! সরকারের একাধিক কড়া নির্দেশিকা সত্ত্বেও নিজেদের জায়গা থেকে একফোটাও হরেনি অসাধু চক্রের পান্ডারা। যদিও বালি পাচার রুখতে বালি খাদান থেকে রাজস্ব আদায়ের জন্য ই-চালান ব্যবস্থা চালু করেছে রাজ্য সরকার। তবে তাতেও হয়নি সুরাহা। অভিযোগ, বালি বহনকারী গাড়ির চালকদের একটা বড় অংশ ই-চালান নিতে নারাজ। এবার সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই বালির গাড়িগুলিতে জিপিএস ট্র্যাকার (GPS Tracker) বসানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
রাজ্যের সিদ্ধান্তে চাপে অসাধু চক্রের পান্ডারা?
সরকারের তরফে বালির গাড়িগুলিতে জিপিএস ট্যাকার বসানোর সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসতেই এক প্রকার চাপে পড়েছেন বালি পাচারকারী গোষ্ঠীগুলির পান্ডারা। সূত্রের খবর, বর্তমানে রাজ্য জুড়ে বালি খাদান নিলামের কাজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পাচারের কাজে নজরদারির দায়িত্ব রয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনারেল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেন্ডিং কর্পোরেশনের ওপর।
জানা যাচ্ছে, রাজ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বালি সরবরাহের নাম করে পাচারকারীরা গাড়ি গুলির চালককে ঘুষ খাইয়ে অসাধু উপায়ে বেআইনি পথে বালি পাচার করেন। এবার সেই খবর সামনে আসতেই বড়সড় পদক্ষেপ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বালি বহনকারী লরি গুলিতে জিপিএস সিস্টেম লাগিয়ে গাড়িগুলির গতিবিধির সহজে ট্র্যাক করার জন্য বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যার দরুণ রাজ্য স্তরের কন্ট্রোল রুম থেকে সরাসরি বালির লরি গুলির গতিবিধিতে নজর রাখা যাবে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
কেন তড়িঘড়ি লড়িগুলিতে জিপিএস ট্র্যাকার লাগানোর সিদ্ধান্ত নিল সরকার?
জানা যাচ্ছে, রাজ্যজুড়ে বেআইনি উপায়ে অসাধু ব্যক্তিদের বালি পাচারের সাথে জুড়ে গিয়েছে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী-আমালাদের নামও! রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বালি পাচারের ঘটনায় বহুবার কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে তৃণমূলের বহু নেতা কর্মীকে। সেই সাথে প্রশ্ন উঠেছে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়েও। মনে করা হচ্ছে, এবার সেই সব ঝুট ঝামেলা থেকে বাঁচতে তড়িঘড়ি বালি সরবরাহকারী লরিগুলিতে জিপিএস ট্র্যাকার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
কীভাবে কাজ করবে এই ট্র্যাকার?
সূত্রের খবর, রাজ্যজুড়ে বালি বহনকারী লরিগুলিতে জিপিএস ট্র্যাকার বসিয়ে মূলত কন্ট্রোল রুম থেকে সরাসরি লরি গুলির গতিবিধিতে নজর রাখবে প্রশাসন। জানা যাচ্ছে, লরি গুলি বালি নিয়ে কোন পথে যাচ্ছে তার যাবতীয় তথ্য জিপিএস ট্র্যাকারের মাধ্যমে পৌঁছে যাবে পুলিশ প্রশাসন, রেভিনিউ দফতর ও মোটর ভেহিকেলস অফিসারদের কাছে।
জানা যাচ্ছে, রাজ্যের এই সংশ্লিষ্ট সরকারি ক্ষেত্রগুলিতে নিযুক্ত অফিসারদের প্রত্যেকের মোবাইলেই ইনস্টল করা রয়েছে, এনফোর্সমেন্ট অ্যাপ। সেই অ্যাপের দৌলতেই লরি গুলির যাবতীয় গতিবিধি মেসেজ আকারে পেয়ে যাবেন প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা।
অবশ্যই পড়ুন: টোটো চালিয়ে পড়াশোনা, করেছেন MSC পাস, শান্তিপুরের দেবীর কাহিনী অনুপ্রেরণা দেবে
লাভ হবে রাজ্যের?
বেশ কয়েকটি রিপোর্ট মারফত খবর, গত 2023-24 বর্ষে বালি খাদান থেকে কমপক্ষে 600 কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছিল সরকার। সূত্র বলছে, বালি পাচার রুখতে লরিগুলিতে জিপিএস ট্র্যাকার লাগালে বালি চুরি যেমন আটকানো যাবে ঠিক তেমনই আইনি পদ্ধতিতে বালি সরবরাহের পাশাপাশি চলতি অর্থ বর্ষে বালি খাদান গুলি থেকে সরকারের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও অনেকটাই বাড়বে। উল্লেখ্য, সূত্র মারফত খবর, রাজ্যের প্রায় 1 লক্ষ্য বালির লরিতে জিপিএস ট্র্যাকার বসাতে সাথে চলেছে রাজ্যে সরকার।