ব্যাংক জালিয়াতিতে উড়ে গেল ১০৭ কোটি টাকা! আপনার টাকা সুরক্ষিত তো?

ভারতের ডিজিটাল লেনদেনের হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংক জালিয়াতিও (Bank Fraud) ক্রমশ বেড়ে চলেছে। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসেই নাকি ডিজিটাল প্রতারণার শিকার হয়ে গ্রাহকরা ১০৭ কোটি টাকা হারিয়েছে।

এর ফলে উদ্বেগ প্রকাশ করছে সাধারণ মানুষ। সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট বলছে, প্রতারণার শিকার হওয়া তিনজনের মধ্যে দুজনই চাইছে ব্যাংক যেন তাদের হারানো টাকা ফেরত দেয়। পাশাপাশি অর্ধেকের বেশি মানুষ চাইছেন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি যেন গ্রাহক সুরক্ষায় আরো বাড়তি নজরদারি করে।

ব্যাংক প্রতারণা নিয়ে কী বলছে সমীক্ষা?

বেশ কিছু সূত্র মারফত খবর, সম্প্রতি ১৪টি দেশের ১১হাজার জন গ্রাহকের উপর একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে ভারতের গ্রাহকদের কাছ থেকেও বিভিন্ন মতামত নেওয়া হয়েছে। 

  • ৮৭% গ্রাহক মনে করছে ব্যাংকিং খাতে প্রতারণা দমন ব্যবস্থা মোটামুটি ঠিকঠাক রয়েছে। 
  • ৩৭% মানুষ মনে করছে ব্যাংকগুলির উচিত প্রতারণার দায়ভার গ্রহণ করা। 
  • ৬৬% গ্রাহক মনে করছে, যদি কেউ ডিজিটাল প্রতারণার শিকার হন তাহলে ব্যাংক যেন তাদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেয়। 
  • ৫৭% মানুষ দাবি করছে ব্যাংককে আরো কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে জালিয়াতি আটকাতে। 
  • ৫০% মানুষ মনে করছে গ্রাহক সচেতনতা বাড়ানোর জন্য আরও বেশি সতর্কবার্তা জারি করা উচিত।
READ MORE:  DA Hike: এবার মিলবে অতিরিক্ত বেতন, DA, বকেয়া টাকাও! দোলের আগে বড় পদক্ষেপ সরকারের | Dearness Allowance Hike By Government Of Madhya Pradesh

এই পরিসংখ্যানগুলি দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে, মানুষ এখন আর্থিক নিরাপত্তা নিয়ে বেশ চিন্তিত এবং তারা চান সরকার ও ব্যাংকগুলি যেন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

ডিজিটাল প্রতারণা কেন বাড়ছে?

বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, অনলাইন ব্যাংকিং, কার্ড পেমেন্ট এবং ইউপিআই ব্যবস্থার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রতারকের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। ভুয়ো লিংক বা ইমেইলের মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ফোন কল বা মেসেজের মাধ্যমে ওটিপি জেনে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

READ MORE:  এবার মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যের বড় পদক্ষেপ

সিম ক্লোন করে ব্যাংকিং তথ্য চুরি করা হচ্ছে। এমনকি গ্রাহকদের ভুলিয়ে জাল অ্যাপে লগইন করিয়ে ব্যাংকের তথ্য চুরি করে নেওয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, যতদিন না গ্রাহকরা সতর্ক হবেন এবং ব্যাংকগুলো আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, ততদিন এই সমস্যা আটকানো সম্ভব হবে না।

প্রতারণা রুখতে নতুন নিয়ম

সাম্প্রতিক সময়ে সংসদে এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা চলেছে এবং সরকার জানিয়েছে যে, ডিজিটাল প্রতারণা প্রতিরোধ করতে আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ব্যাংকগুলিকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন প্রতারণার ঘটনা ঘটলেই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

পাশাপাশি AI ভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সন্দেহজনক লেনদেন সনাক্ত করা হচ্ছে। গ্রাহকরা যাতে সহজেই অভিযোগ জানাতে পারে, সেজন্য হেল্পলাইন নাম্বারও চালু করা হয়েছে।

READ MORE:  Government Employee: হোলির আগেই এতটা বাড়তে পারে DA, DR! সরকারি কর্মীদের জন্য বিরাট খবর | May Dearness Allowance And DR Hike Before Holi

কীভাবে সতর্ক থাকবেন?

ডিজিটাল প্রতারণা থেকে নিজেকে বাঁচাতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা মেনে চলুন। প্রথমত অপরিচিত নাম্বার থেকে আসা ফোন কল বা মেসেজিং ওটিপি এড়িয়ে চলুন। ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ছাড়া অন্য কোন পোর্টালে লগইন করবেন না।

পাসওয়ার্ড ও পিন নাম্বার গোপন করে রাখুন এবং নিয়মিত পরিবর্তন করুন। যেকোন সন্দেহজনক লেনদেন হলে দ্রুত ব্যাংকে জানান। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ বা ইমেইল এর মাধ্যমে কোন ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না। ডিজিটাল প্রতারণা রোধ করতে ব্যাংক, সরকার এবং সাধারণ গ্রাহকদের একসঙ্গে এগিয়ে এসে জরুরি। ব্যাংকিং সুরক্ষা যত শক্তিশালী হবে তত ডিজিটাল প্রতারণা হ্রাস পাবে। 

Scroll to Top