শ্বেতা মিত্র, কলকাতা: এবার সংসদে উঠল বাংলার জমি জট প্রসঙ্গ। আর এই বিষয়টি উঠতেই তুমুল হাঙ্গামা শুরু হয় রাজ্যসভায়। মেট্রো প্রকল্প থেকে শুরু করে অন্যান্য রেল প্রকল্প, বাংলায় একের পর এক জমি অধিগ্রহণের কাজ যে আটকে রয়েছে তা নিয়ে রীতিমতো বিস্ফোরক দাবি করলেন রেলমন্ত্রী। সংসদে রেলমন্ত্রী যা বললেন তাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। একপ্রকার তাঁর মন্তব্য ঘিরে তুমুল বাকবিতান্ডা শুরু হয়েছে শাসক দলের অন্দরে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
কী বললেন রেলমন্ত্রী?
সংসদে দাঁড়িয়ে অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, ‘জমি অধিগ্রহণে আরও সাহায্য দরকার আমাদের। মাত্র ২১ শতাংশ জমি দিয়েছে। নন্দীগ্রামে কাজ শুরু করতেই আমাদের ৩ বছর সময় লেগেছে।’ বাংলার সরকারের কাছে রেলমন্ত্রীর আর্জি, ‘ব্যারাকপুর থেকে বারাসাত, জমি জবরদখলমুক্ত করতে সাহায্য করুন। ভবানীপুরে জমি চাই, দয়া করে পাইয়ে দিন। কাজ দ্রুত গতিতে এগোবে। ভবানীপুর বিধানসভা কার এলাকা সেটা সবাই জানে।’
রেলমন্ত্রীর মুখে নন্দীগ্রাম
এক সময় দেশপ্রাণ থেকে নন্দিগ্রাম পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটারের রেল প্রকল্প নিয়ে ব্যাপক জট তৈরী হয়েছিল। অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, দেশপ্রাণ থেকে নন্দিগ্রাম পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটারের রেল প্রজেক্ট শেষ করতে লেগেছে ৩ বছর। বহু আইনশৃঙ্খলাজনিত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে এই প্রজেক্টকে। মন্তব্য করেন মেট্রো নিয়েও।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
পরিসংখ্যান তুলে ধরে রেলমন্ত্রী বলেন, ৪০ বছরে কলকাতা মেট্রোয় ২৮ কিলোমিটার পথ তৈরি হয়। তবে, কেন্দ্রে মোদী সরকার আসতেই ১০ বছরে ৩৮ কিলোমিটার পথ কলকাতা মেট্রোতে তৈরি হয়েছে বলে তিনি জানান। নিউব্যারাকপুর-বারাসত রুটের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন রেলমন্ত্রী। জানান, সেখানে বহু জমি দখলে রয়েছে, সেক্ষেত্রে জমি সংক্রান্ত জট কাটাতে রাজ্য সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। এছাড়াও বরানগর-ব্যারাকপুর সেকশনে ‘ইউটিলিটি শিফ্ট’ প্রয়োজন, সেখানেও প্রকল্পের কাজ গতি পাচ্ছে না বলে সংসদে জানান রেলমন্ত্রী। রেলমন্ত্রীর এহেন পরিসংখ্যান ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল সংসদ।
রেল দুর্ঘটনা নিয়ে বড় দাবি
অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, ‘২০০৫-০৬ সালে ৬৯৮টি ট্রেন দুর্ঘটনা ছিল, যা আজ ৭৩টিতে নেমে এসেছে। এটি ৯০% হ্রাস। ২০০৫-০৬ সালে, যখন লালু প্রসাদ যাদব রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখন প্রতিদিন গড়ে ২টি দুর্ঘটনা ঘটত। ওই সময়কালে মোট ৬৯৮টি ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছিল, যার মধ্যে ২৩৪টি দুর্ঘটনা ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে ৩৯৫টি ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছিল যার মধ্যে ১৬৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। বৈষ্ণব বলেন, মল্লিকার্জুন খাড়গের আমলে মোট ৩৮১টি ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছিল, যার মধ্যে ১১৮টি দুর্ঘটনাও ছিল।’