প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: সরকারি বিভিন্ন পরিষেবা, ব্যাঙ্কের সুযোগ-সুবিধা, টেলিকম সংক্রান্ত বিভিন্ন পরিষেবা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে কোনো পরিষেবা পেতে গেলে সবার আগে প্রয়োজন হয় আধার কার্ডের (Aadhaar Card)। এককথায় বলা যায় এইমুহুর্তে ১২ ডিজিটের আধার নম্বর ভারতের নাগরিকদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি নথি। কিন্তু জানেন কি এই আধার কার্ড সর্বপ্রথম কে পেয়েছিল? মহারাষ্ট্রের টেম্বলি নামে এক প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জনা সোনাওয়ান, তিনিই প্রথম ভারতীয় যিনি আধার কার্ড পেয়েছেন। তবে দুঃখের বিষয় হল আধার পরিচয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত তিনি একটি নতুন প্রতীকী মুখ হওয়া সত্ত্বেও আজও তাঁর পরিবার আর্থিকভাবে সংগ্রাম করে চলেছেন। পাননি কোনো সরকারি সুবিধা।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
প্রথম আধার কার্ডধারী হয়েও মেলেনি সুবিধা?
জানা গিয়েছে রঞ্জনা সোনাওয়ান পেশায় দিনমজুর। তাঁর স্বামী বাচ্চাদের জন্য খেলনা বানায়। গ্রামে অথবা আশেপাশে কোনো মেলা বসলে সেই খেলনা বিক্রি করে যেটুকু রোজগার হয় তাই দিয়ে সংসার চলে তাঁদের। এই দুর্মূল্যের বাজারে বার্ষিক আয় মাত্র ৪০ হাজার টাকা। এদিকে তিন ছেলের মধ্যে একজন কাজ করেন। বাকি দু’জন এখনও পড়াশোনা করছে। কিন্তু এই রঞ্জনাই ২০১০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দেশের প্রথম আধার কার্ডধারী নাগরিক হিসেবে খবরের কাগজের শিরোনামে উঠে এসেছিল। সেই সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এবং সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে তাঁর ছবি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে উঠে এসেছিল। যার ফলে তিনি আশা করেছিলেন যে এবার হয়ত তাঁর সামনে সামাজিক সহায়তার দরজা খুলে যাবে। কিন্তু সেই আশা তাঁর বিন্দুমাত্র পূরণ হল না।
আধার অন্য অ্যাকাউন্টের সঙ্গে লিঙ্ক করার অভিযোগ!
এদিকে সরকারের একাধিক প্রকল্পের সুবিধা রয়েছে রঞ্জনা দেবীর। যে সকল প্রকল্পগুলির সুবিধা তাঁর পাওয়া উচিৎ তার মধ্যে অন্যতম হল লাড়কি বেহেন যোজনা। যেখানে ২১ থেকে ৬৫ বছর বয়সী মহিলাদের মাসিক ১,৫০০ টাকা সহায়তা প্রদান করে থাকে রাজ্য সরকার। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রঞ্জনা সেই প্রকল্পের সুবিধা এখনও পায়নি। তাঁর অন্যতম কারণ হল এই আধার কার্ড, যার জন্য রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। অন্তত সাতবার রঞ্জনা তালুক অফিসে গিয়ে আধার সঠিকভাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযুক্ত করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাঁর নাকি আধার অন্য কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে লিঙ্ক করা আছে বলে জানা গিয়েছে। যার ফলে কোনও প্রকল্পের কোনও সুবিধাই তাঁর কাছে পৌঁছবে না।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
সরকারের প্রতি ভরসা হারিয়েছে রঞ্জনা
এই প্রসঙ্গে আধার কর্তৃপক্ষ এবং ব্যাঙ্কের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সত্ত্বেও, তাঁকে সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যাঙ্কের মুম্বই শাখায় যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু আর্থিক পরিস্থিতির বেহাল দশার কারণে মুম্বইতে যাওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না। এদিকে জেলা আধিকারিকরাও জানিয়েছে যে সমস্যাটি সম্ভবত একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট অথবা আধার সংযোগের সময় ব্যাঙ্ক লিঙ্কে ত্রুটির কারণে তৈরি হয়েছে। কিন্তু একাধিক প্রচেষ্টার পরেও কোনও সমাধান না মেলায় ক্ষুব্ধ রঞ্জনা দেবী। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি আর কোনো ভাবেই সরকারের উপর নির্ভর করতে পারছেন না। পরিবারের দেখাশোনা করার জন্য নিজের ছেলেদের উপর তাঁর আস্থা রয়েছে।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।