সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: রেশন কার্ড, যা নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তদের কাছে এক বিরাট আশীর্বাদ। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৫৫ লক্ষ মানুষ অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনার (AAY Ration Card) অধীনে রেশনের সুবিধা পান। আর তাদের মধ্যে বেশিরভাগই আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবার। তবে সম্প্রতি এমন এক তথ্য উঠে এসেছে, যা খাদ্য দপ্তরকেই রীতিমতো চমক দিচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
হ্যাঁ, শোনা যাচ্ছে, অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনার (AAY) তালিকাভুক্ত গ্রাহকদের মধ্যে ৩ লক্ষের বেশি রেশন কার্ড রয়েছে, যে পরিবারে শুধুমাত্র একজন সদস্য রয়েছেন। আর সবথেকে অবাক করার বিষয়, এই একজন সদস্যের অধিকাংশ নাকি ১৮ বছরের নীচে শিশুরা। আর এত অল্প বয়সে কেউ যদি একা বসবাস করেন এবং নিজের নামে রেশন কার্ড বানিয়ে ফেলেন, তাহলে সেটা কতটা যুক্তসম্মত? আর এই প্রশ্নকে ঘিরেই রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে।
খাদ্য দপ্তর কী বলছে?
সম্প্রতি জারি করা এক নির্দেশিকায় এক সদস্যের পরিবারগুলিকে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে খাদ্য দপ্তর। যদি দেখায় দেখা যায় যে, এমন কোন শিশু বা কিশোরের কোন প্রকৃত অস্তিত্ব নেই, তাহলে সেই কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করার কথা বলা হয়েছে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
আবার যদি দেখা যায়, সত্যিই তার অস্তিত্ব রয়েছে বা কেউ আলাদা থেকে থাকে, তাহলে তার রেশন কার্ডকে পরিবারের মূল কার্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। হ্যাঁ, খাদ্য দপ্তরের মতে প্রকৃত অভাবী পরিবার যাতে এই সুবিধা পান, তার জন্যই এই উদ্যোগ। কারণ অপ্রয়োজনীয় বা ভুয়ো কার্ডগুলিকে বাতিল করে দিলে গরিব পরিবাররা সুবিধা পেতে পারবেন।
অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনার (AAY) সুবিধা
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা (AAY) কার্ডের আওতায় প্রতিটি পরিবার মাসে ৩৫ কেজি খাদ্য সামগ্রী অর্থাৎ চাল এবং গম সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পায়। এছাড়া প্রায়োরিটি এবং স্পেশাল প্রায়োরিটি গ্রাহকরা মাথাপিছু ৫ কেজি করে খাদ্যদ্রব্য পান। মূলত প্রত্যন্ত গরিব পরিবারগুলিকেই এই কার্ড দেওয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ করে যদি এত এক সদস্যের পরিবার বেড়ে যায়, তাহলে অভাবী পরিবারগুলি এই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হবে।
পরিসংখ্যান কী বলছে?
খাদ্য দপ্তরের পরিসংখ্যানে স্পষ্ট উঠে এসেছে, এখনো পর্যন্ত অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনার (AAY) তালিকায় ১৩,১৮৬টি এমন পরিবার নথিভুক্ত রয়েছে, যে পরিবারগুলিতে একমাত্র সদস্য। গত দুই বছরে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি ঘটেছে। আর এতে আরও বেশি সন্দেহের জন্ম দিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে এটি কার্ড জালিয়াতি বা অনৈতিকভাবে সুবিধা নেওয়ার পদ্ধতি বলেও মনে করছে অনেকে।
তাই এখন সরকার চাইছে প্রকৃত দরিদ্র সীমার নীচে থাকা পরিবারগুলিকেই এই প্রকল্পের সুবিধা দিতে এবং যদি ভুয়ো কার্ড বা কোন কারচুপি দেখা যায়, তাহলে সেই কার্ডগুলিকে অবিলম্বে নিষ্ক্রিয় করে দিতে।