সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ধনকুবেরদের কথা উঠলেই এলন মাস্ক, জেফ বেজোস, গৌতম আদানি, মুকেশ আম্বানি এদের কথা প্রথমেই মনে আসে। হ্যাঁ, আমরা এদেরকেই হয়তো পৃথিবীর সবথেকে ধনী মানুষ হিসেবে চিনি। কিন্তু ইতিহাস ঘাটলে এমন এক নারীর কথা উঠে আসবে, যিনি আধুনিক যুগের ধনকুবেরদের সম্মিলিত মোট সম্পদের থেকেও বেশি ধনী ছিলেন। কি শুনতে অবাক লাগছে? আসলে বাস্তবে এটাই সত্যি।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
আমরা যার কথা বলছি, সেই মহিলা ছিলেন চীনের সম্রাজ্ঞী উ জেতিয়ান (Empress Wu Zetian)। একবার ভাবুন, বর্তমান সময় অনুযায়ী তার সম্পদের পরিমাণ ছিল 16 ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর এই বিপুল সম্পদের কথা শুনলে যে কারো চক্ষু চড়কগাছে উঠবে। কিন্তু ইতিহাস বলছে, তিনিই ছিলেন বিশ্বের সবথেকে ধনী নারী।
কে ছিলেন এই উ জেতিয়ান?
চীনের তাং রাজবংশের সময় অর্থাৎ, খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে সম্রাজ্ঞী উ জেতিয়ান রাজত্ব করছিলেন। ইতিহাস বলছে, তিনি 690 সাল থেকে 705 সাল পর্যন্ত চীনের নারী সম্রাজ্ঞী ছিলেন। তিনি শুধুমাত্র রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ ছিলেন না, বরং অর্থনৈতিক দিক থেকেও তার অবদান ছিল জুড়ি মেলা ভার।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
তার শাসনকালের এখনকার জিংপিং এর দেশ ছিল বিরাট শক্তিশালী এবং ধনী সাম্রাজ্য। তিনি দেশের খাজনা, কর, বিরাট জমির মালিকানা এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। আর এগুলি থেকেই সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন।
কোথা থেকে আসলো এই বিপুল সম্পদ?
আমরা একটু ইতিহাস ঘাটলে জানতে পারবো, সম্রাজ্ঞী উ জেতিয়ানের সম্পদের মূল উৎস ছিল চীনের রাজকোষের উপর নিয়ন্ত্রণ, সাম্রাজ্যের জমিজমা, খনিজ সম্পদের মালিকানা, জনসাধারণের উপর করের বোঝা এবং রেশম পথ দিয়ে চলা বাণিজ্যে হস্তক্ষেপ।
সূত্র বলছে, চীনের তাং সাম্রাজ্য সেই সময় বিশ্বের বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ছিল। আর সেই জায়গার একছত্র অধিপত্য বিস্তার করেছিল উ জেতিয়ান। ঐতিহাসিকদের মতে, যদি আজকের আর্থিক হিসাব দিয়ে তার সম্পদ বিবেচনা করা হয়, তাহলে তা 16 ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়াবে, যা একসঙ্গে লন মাস্ক, জেফ বেজোস, গৌতম আদানি, মুকেশ আম্বানি, সবার মিলিত সম্পদের থেকেও কয়েক গুণ বেশি।
আজও ইতিহাসের পাতায় লেখা উ জেতিয়ানের নাম
সম্রাজ্ঞী উ জেতিয়ানের জীবনী আজও বহু বই, সিনেমা, কিংবা টিভি সিরিজে চোখে পড়ে। ‘Empress of China’ নামের জনপ্রিয় এক চীনা ধারাবাহিকে তার আত্মকথা এক নতুন রূপে ফুটে উঠেছে। তার নেতৃত্ব, দায়িত্ব গ্রহণ, ঐতিহাসিক প্রভাব এবং বিরাট সম্পদের মালিকানা দিয়ে তিনি রয়ে গেছেন ইতিহাসের এক কিংবদন্তির কাতারে। যিনি একধারে ছিলেন রাজনীতি ও সংস্কৃতি নিয়ে এবং একধারে ছিলেন অর্থনৈতিক জগতের প্রভাবশালী নারী।