পশ্চিমবঙ্গ সরকার দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আবাসন, ১০০ দিনের কাজ এবং গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ সহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে তহবিল আটকে রাখার অভিযোগ করে আসছে। যদিও বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, যিনি কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীও, উল্লেখ করেছেন যে গাজোল-হিলি জাতীয় মহাসড়ক সম্প্রসারণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দুই বছরের মধ্যে ১,৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার পরেও, রাজ্য সরকার প্রকল্পটি বাস্তবায়নে উৎসাহ দেখায়নি।
তবে, রাজ্য দাবি করেছে যে কেন্দ্রীয় সরকার পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করেনি, যার ফলে রাজ্য উন্নয়নের জন্য বিষয়গুলি নিজের হাতে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। ফলস্বরূপ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যজুড়ে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার দিকে মনোনিবেশ করছে।
রাজ্যের টাকাতেই গ্রামীণ সড়ক
কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিলের অভাবে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ইতিমধ্যেই গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামো উন্নত করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। রাজ্য ৩২,০০০ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে প্রায় ৯,০০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে, যা গ্রামীণ এলাকার জন্য উন্নত যোগাযোগ নিশ্চিত করবে।
উচ্চাভিলাষী সড়ক সংস্কার পরিকল্পনা
কেন্দ্রীয় তহবিলের অভাব থাকা সত্ত্বেও, পশ্চিমবঙ্গ সরকার মার্চ মাসের মধ্যে রাজ্যজুড়ে প্রায় ১,০০০ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার ও নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। রাজ্য এই বিশাল উদ্যোগের জন্য প্রায় ৩,৫২৭ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করেছে, যা পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন করা হবে। নবান্ন (রাজ্য সচিবালয়) সূত্রের মতে, এই প্রকল্পটি পূর্তদফতর দ্বারা ইতিমধ্যে মূল্যায়ন করা ১১৯টি বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে।
সকল জেলার জন্য সুবিধা
সড়ক সংস্কার পরিকল্পনা পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলাকে উপকৃত করবে। কেবল নতুন রাস্তা নির্মাণই নয়, বিদ্যমান রাস্তাগুলিও সংস্কার করা হবে। এছাড়াও, ছোট এবং বড় উভয় ধরণের ১৪টি নতুন সেতু এই প্রকল্পের অংশ। এই উদ্যোগের লক্ষ্য রাজ্যজুড়ে সড়ক যোগাযোগ এবং সামগ্রিক অবকাঠামো উন্নত করা, স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত করা।
সমাপ্তির জন্য কঠোর সময়সীমা
পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রতিটি সড়ক প্রকল্প সমাপ্তির জন্য কঠোর সময়সীমা নির্ধারণ করেছে। গণপূর্তমন্ত্রী পুলক রায় এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সকল কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্য হল মার্চ মাসের মধ্যে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পন্ন করা। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের জন্য রাজ্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, তাই এই প্রকল্পটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।