কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) জগতে নতুন চমক এনেছে চীনের ডিপসিক R1। মাত্র এক সপ্তাহ আগে লঞ্চ হওয়া এই AI মডেল ইতিমধ্যেই বিশ্বের প্রযুক্তি এবং আর্থিক ক্ষেত্রে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। চীনের হাই ফ্লায়ার হেজ ফান্ডের অধীনস্থ এই AI প্ল্যাটফর্মটি খুব দ্রুতই সিলিকন ভ্যালির মতো জায়গাগুলোতে প্রভাব ফেলছে।
ডিপসিক কী?
ডিপসিক AI হলো একটি লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল, যা চ্যাটজিপিটির মতোই একটি AI প্লাটফর্ম। তবে ডিপসিকের বিশেষত্ব হল, এটি তুলনামূলকভাবে কম মূলধন এবং কর্মী নিয়েও খুব দ্রুত সাফল্য অর্জন করেছে। চীনের এই কোম্পানির প্রতিষ্ঠা মাত্র ২ বছর আগে হলেও এর উন্নত মডেল ইতিমধ্যেই ওপেন AI-এর চ্যাটজিপিটির সাথে প্রতিযোগিতায় নেমে গেছে।
শেয়ার বাজারে বড় ধাক্কা
ডিপসিকের উত্থানের পর আমেরিকার শেয়ারবাজারে পতন দেখা গেছে। ২৭শে জানুয়ারি এS&P 500 সূচক ১.৭% নেমে যায় এবং নাসডাকের সূচক প্রায় ২.৮% নেমে গেছে। বিশেষত এনভিডিয়া, যা AI চিপস বাজার দখল করে রয়েছে, তাদের শেয়ারের দাম ১৭% কমে যায়। এই পতনের ফলে এনভিডিয়ার বাজার মূল্য থেকে প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার উধাও হয়ে গেছে।
ডিপসিক কেন আলাদা?
ডিপসিক তাদের AI মডেল তৈরিতে বাইদু বা আলিবাবার মত বড় সংস্থার উপর নির্ভর করে না। নিজেরাই AMD-এর মতো প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করেছে। AMD-এর GPU এবং ROCM সফটওয়্যারের মাধ্যমে ডিপসিক তাদের মডেলকে আরও উন্নত করে তুলেছে। অন্যদিকে তারা গবেষণায় বেশি মনোযোগ দিচ্ছে, বাণিজ্যের দিকে নয়।
ভারতে ডিপসিকের প্রভাব
ডিপসিকের উত্থান ভারতে AI সংক্রান্ত গবেষণা এবং বিনিয়োগে নতুন মাত্রা যোগ করে ফেলেছে। চীনের মত দেশ যেখানে কম খরচে AI মডেল তৈরি করছে, সেখানে ভারতীয় স্টার্টআপগুলিও এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারে। তবে এটি ভারতের প্রযুক্তি বাজারে আমেরিকান কোম্পানিগুলির উপস্থিতি কতটা প্রভাবিত করবে তা সময় বলা যাবে।
চীনের AI ভবিষ্যৎ
ডিপসিকের সাফল্য চীনের AI শিল্পে বরফ সাফল্য এনে দিয়েছে। তবে চীনের AI মডেলগুলি আন্তর্জাতিক বাজারে কতটা সাফল্য পাবে তা এখন দেখার বিষয়।
ডিপসিক R1-এর মাধ্যমে চীন প্রমাণ করেছে যে, AI তৈরির জন্য শুধুমাত্র বড় মূলধনই নয়, বরং সঠিক কৌশল এবং প্রতিভার প্রয়োজন। তবে AI-এর এই প্রতিযোগিতা প্রযুক্তির জগতে নতুন রাস্তা খুলে দিতে পারে।