৬ মাসে দুর্ঘটনায় হারিয়েছিল পা, দুয়ারে সরকার ফিরিয়ে দিল যুবকের জীবন

মাত্র ছয় মাস বয়সেই জীবনের সবথেকে কঠিন সত্যের মুখোমুখি হয়েছিল মোকসেদ আলম। এক ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনায় হারিয়ে ফেলেছিল নিজের বাঁ পা। স্বাভাবিক জীবনের স্বপ্ন যেন ফিকে হয়ে গেছিল তার। কিন্তু দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প তাকে নতুন জীবন ফিরিয়ে দিল।

দুর্ঘটনা বদলে দিল সবকিছু

চাকুলিয়ার কাহালাগাঁওয়ের বাসিন্দা মোকসেদ আলম। তার জীবনটা পুরোপুরি বদলে গিয়েছিল মাত্র ৬ মাস বয়সেই। বাড়ির সামনে রাস্তায় একটি ভয়ানক পথ দুর্ঘটনায় সে তার বাঁ পা হারিয়ে ফেলেছিল। তখন থেকেই তার চলাফেরার একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে লাঠি। অন্যদের মতো স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করা, খেলাধুলা করা তো দূরের কথা, স্কুলে যাওয়াটাও ঠিকমতো হয়ে উঠছিল না মোকসেদ আলমের। 

READ MORE:  ভ্যালেনটাইন্স ডে'তে বান্ধবীকে গহনা উপহারের ইচ্ছে? জেনে নিন আজকের সোনা, রুপোর দর

বন্ধুরা যখন মাঠে খেলাধুলায় মেতে উঠত বা সাইকেল চালিয়ে ঘুরে বেড়াতো, তখন এককোনে চুপচাপ বসে থাকতো মোকসেদ। কিছুই করার ছিল না তার। শৈশবের আনন্দ যেন তার কাছে দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

অসহায় পরিবারের কষ্ট 

মোকসেদ আলমের পরিবার একেবারেই নিম্নবিত্ত। বাবা মুজলু হক আর মা জৈনগন বিবি তাদের ছেলেকে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে চাইলেও অর্থের অভাবে তারা ব্যর্থ হয়েছিল। পাঁচ বোন এবং এক ভাই নিয়ে তাদের সংসার। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা মেটাতেই বাবার পায়ের ঘাম মাথায় ওঠে। কৃত্রিম পা কেনার মতো সামর্থ্য তাদের ছিল না। তাই ছেলেকে এভাবে দুর্বিসহ জীবন কাটাতে হচ্ছিল।

READ MORE:  বেকার যুবক-যুবতীদের জন্যে বড় উদ্যোগ রাজ্যের, ডেকে ডেকে চাকরি দিচ্ছে সবাইকে

দুয়ারে সরকার নিয়ে আসলো নতুন আলো

মোকসেদের পরিবার যখন সরকারি সাহায্যের আশা করছিল, তখন তারা জানতে পারে রাজ্যের দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের কথা। বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ৯ থেকে ১১ই ফেব্রুয়ারি গোয়ালপোখর ২ নম্বর ব্লকে এই বিশেষ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই ক্যাম্পে উপস্থিত থেকে তার পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে সরকারি আধিকারিকরা দ্রুত তার জন্য কৃত্রিম পায়ের ব্যবস্থা করে দেয়।

নতুন করে হাঁটা শিখলো মোকসেদ

সরকারের দেওয়া প্লাস্টিকের কৃত্রিম পায়ের সাহায্যে এখন দিব্যি হেঁটে চলে বেড়াচ্ছে মোকসেদ আলম। শুধু তাই নয়, সে এখন সাইকেলও চালাতে পারে। খেলাধুলায় অংশ নিতে পারে। এমনকি ছুটতেও পারে। যে স্বপ্ন একসময় তার ধোঁয়াশা ছিল, সেটাই এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। বন্ধুদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়াটা যে আর কল্পনা নয়, সেটা এখন মোকসেদ বুঝতে পারছে।

READ MORE:  Indian Overseas Bank Recruitment 2025: ৭৫০ শূন্যপদে নিয়োগ, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্কে পশ্চিমবঙ্গ থেকেও চাকরির সুবর্ণ সুযোগ | Indian Overseas Bank Recruitment

এই সাহায্য পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে মোকসেদ আলম এবং তার পরিবার। তাদের মতে, এই সহায়তা না পেলে ছেলের স্বপ্ন হয়তো অধরাই থেকে যেত। মোকসেদের এই নতুন জীবন শুধু তার পরিবার নয়, গোটা এলাকার মানুষের জন্য একটি বড় অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।

Scroll to Top