৩৫১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে রাজ্য সরকার, কারা পাচ্ছেন এই টাকা?

নতুন বছরের শুরুতেই রাজ্য সরকার কৃষকদের জন্য বড় সুখবর নিয়ে আসলো। বিগত কয়েক মাস ধরে রাজ্যে বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদির প্রভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষত ধান ও শাকসবজি চাষে বিরাট প্রভাব পড়েছে।

এই দুর্যোগে বিপর্যস্ত কৃষকদের সহায়তা করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার ‘বাংলা শস্য বিমা প্রকল্প’ (Crop Insurance) চালু করেছিল। অবশেষে এই প্রকল্পের অধীনে ক্ষতিপূরণের টাকা কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে দেওয়া শুরু হয়েছে। 

৯ লক্ষ কৃষকের জন্য ৩৫১ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ

সংবাদসূত্রের খবর অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৯ লক্ষ কৃষকদের জন্য ৩৫১ কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছিলেন যে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো হবে। এবার সেই প্রতিশ্রুতি সত্যি হলো। গত শনিবার নবান্নে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সরকারি প্রকল্পগুলির অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।

READ MORE:  ৮ম পে কমিশনে সরকারি কর্মচারীদের বেতন, পেনশন প্রত্যাশা অনুযায়ী নাও হতে পারে

এই বৈঠকে জানা যায়, খরিফ মরসুমে ধান চাষ করে যারা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন তারাই মূলত এই আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন। বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পের আওতায় থাকা কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানো শুরু হয়েছে।

প্রিমিয়াম ছাড়, কৃষকদের জন্য বড় স্বস্তি

শুধুমাত্র ক্ষতিপূরণই নয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবার রবি ও খরিফ মরসুমের জন্য কৃষকদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কৃষি দপ্তরের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মরসুমে ৭১ লক্ষ ৯৮ হাজার কৃষকের নাম বাংলা শস্য বীমা প্রকল্পের তালিকায় নথিভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে আলু চাষীদের সংখ্যা ১২ লক্ষ ১৩ হাজার।

READ MORE:  Inflation: আজকের ১ কোটি টাকা ১০ বছর পর কত হবে? হিসাব দেখলে চমকে উঠবেন 1 Crore Rupee Value After 10 Year

এবারই প্রথম আলু এবং আখ চাষীদের জন্য বীমা প্রিমিয়াম সম্পূর্ণরূপে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আগে এই দুটি ফসলের জন্য কৃষকদের কিছুটা হলেও প্রিমিয়াম দিতে হতো। কিন্তু নতুন বাজেট অনুযায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে কৃষকদের বীমার জন্যে কোন অতিরিক্ত খরচ করতে হবে না।

বাজেট বাড়িয়ে কৃষকদের পাশে রাজ্য সরকার

বাংলা শস্য বীমা প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার বাজেট বৃদ্ধি করেছে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে এই প্রকল্পের জন্য মোট ১০২২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা ছিল, যা ২০২৩-২৪ সালে বাড়িয়ে ১১২৫ কোটি টাকা করা হয়। ২০২৫-২৬ সালের বাজেটে এই প্রকল্পে ১৩১৩ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

READ MORE:  তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত বীমা কোম্পানি বিক্রি করে দিচ্ছে সরকার, গ্রাহকরা কী করবেন?

এখনো পর্যন্ত এই প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ১২ লক্ষ কৃষক মোট ৩২৬২ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন। পাশাপাশি বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের ১২ লক্ষ পরিবারকে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা করে পাঠানো হয়েছে।

কৃষকদের জন্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

শুধুমাত্র বর্তমান সাহায্যে নয়, ভবিষ্যতে কৃষকদের জন্য আরও বাড়তি সুযোগ-সুবিধার ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের কৃষকদের উৎপাদন বাড়াতে নতুন প্রযুক্তি এবং চাষের পদ্ধতি উন্নয়নের উপরেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কৃষকদের বাজারে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করাতেও বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Scroll to Top