সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দেশের গ্রামাঞ্চল থেকে শহরের যেকোনো শাখা, ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার সময় (Bank Transaction) আমরা প্রায়ই একটি কাজ করতে ভুলে যাই। আর তা হল রশিদ বা ট্রানজেকশন সিলিপ নেওয়া। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ফেলেন প্রতারকরা। হ্যাঁ, শান্তিপুর সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক ঘটনা এমনই এক উদাহরণ তুলে এনেছে, যেখানে একজন গ্রাহকের থেকে মুহূর্তের মধ্যে 1000 টাকা কারচুপি করে পকেটে পুরেছে কিঅক্স অপারেটর।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
2000 টাকা তুলে হাতে পেলেন 1000 টাকা
News18 এর খবর অনুযায়ী, শান্তিপুরের এক ব্যাঙ্কিং সেক্টরে অভিযোগ উঠেছিল যে, 20 তারিখে এক গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে কড়কড়ে 2000 টাকা ঢুকেছিল। কিন্তু ওই গ্রাহক ব্যাঙ্কে গিয়ে 1000 টাকা তোলেন। এমনকি অপারেটরও বলেন 1000 টাকা তোলা হয়েছে। কিন্তু পরদিন SMS চেক করে জানতে পারা যায় যে, 2000 টাকা তোলা হয়েছে। এমনকি হাতে দেওয়া হয়েছে মাত্র ১০০০ টাকা। আর এই ব্যাপারটি তদন্ত করে বোঝা যায়, রশিদ না দেওয়ার ফলে নির্দিষ্ট তথ্যের কোন নিশ্চয়তা নেই। ফলে টাকা কোথায় গেল সেই প্রশ্ন অধরা থেকে যাচ্ছে।
আরও একটি একই ধরনের ছবি
এই একই সূত্র ধরে আরও একজন গ্রাহক জানিয়েছেন, তার মা ওই কিঅক্স সেন্টার থেকে এক মাস আগে 2000 টাকা তুলেছিলেন। কিন্তু তার মোবাইলে মেসেজ পাঠানো হয়েছিল 3000 টাকা তোলা হয়েছে। আর যেহেতু ওই দিন সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল, তাই যোগাযোগ করাও আর সম্ভব হয়নি।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
পরদিন অভিযোগ করার পর অভিযুক্ত অপারেটর বাকি 1000 টাকা ফেরত দিয়ে দেন। তবে এই ঘটনার পর ওই গ্রাহক মনে করেন যে, অনেকেই তাদের অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে সচেতন নন। ফলে এরকম ধরনের প্রতারণা দেশের কোণায় কোণায় ঘটে চলেছে।
ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় অসচেতনতা?
গ্রাহকদের মধ্যে অনেকেই এই ধরনের ঘটনার কথা প্রকাশ্য বলছেন না। কারণ তারা অভিযোগ করার পথ খুঁজে পাচ্ছে না। এমনকি তারা আইনি ঝামেলায় পড়তে চান না। তবে এখন সাধারণ একটি প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে এটি, যা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে এবং দিনের পর দিন বাড়ছে।
কিঅক্স সেন্টারের পক্ষ থেকে দাবি
এদিকে কিঅক্স সেন্টারের মালিক এবং অপারেটর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা দাবি করছেন যে, প্রথম ঘটনাটি লিঙ্কের সমস্যার জন্য হয়েছে। তবে তৎক্ষণিক টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। আর দ্বিতীয় অভিযোগে গ্রাহক দাবি করেছে যে, সইটি তার নয়। তবে অপারেটর দাবি করছে যে, গ্রাহকই সই করেছেন।
এদিকে অভিযোগকারীরা সিসিটিভি ক্যামেরা দেখার জন্য অনুরোধ করেছেন। কিন্তু অপারেটর জানায়, সিসিটিভি ক্যামেরায় স্টোরেজ খুব সীমিত। তাই সাধারণত 10 দিনের বেশি কোন রেকর্ড থাকে না। আর এই প্রসঙ্গে গ্রাহকরা প্রশ্ন তুলছেন, যদি 10 দিনের স্টোরেজ হয়, তাহলে কীভাবে তা অনুমোদন পায়? কারণ ন্যূনতম 1 মাসের তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা উচিত।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
এই প্রতারণা এড়াতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা জমা দেওয়া বা তোলার পর অবশ্যই রশিদ সংগ্রহ করা উচিত এবং পাসবুক আপডেট করা উচিত। এক্ষেত্রে যেমন প্রতারণা করার সুযোগ থাকবে না, তেমনই ভবিষ্যতও থাকবে সুরক্ষিত।