বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: আর কত? চলতি ISL মরসুমে হারের খরা কাটিয়ে উঠতে পারেনি ইমামি ইস্টবেঙ্গল। দলের দুর্বল রক্ষণভাগ ও একাধিক ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই কার্যত ডুবেছে লাল হলুদ। AFC চ্যালেঞ্জ লিগে স্বপ্ন দেখলেও তা তাসের ঘরের মতো ভেঙে গিয়েছে। অন্যদিকে, কলকাতা ময়দানের আরেক প্রধান মোহনবাগান যেন সেরার লড়াই লড়ছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
কলকাতার ঐতিহ্যবাহী দুই প্রাচীন দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনেকটাই এগিয়ে সবুজ মেরুন। ইন্ডিয়ান সুপার লিগে কার্যত অপ্রতিরোধ্য থাকার পর এবার হকিতেও ইস্টবেঙ্গলকে মাত দিল মেরিনার্সরা। সম্প্রতি কলকাতা প্রিমিয়ার হকি লিগের(Calcutta Premier Hockey League 2025) গ্রুপ পর্বে ড্র দেখলেও ফাইনালে বাগানের কাছে 1-3 গোলে পরাস্ত হলো মশাল বাহিনী। যা তাদের লজ্জায় নতুন শব্দ জুড়েছে।
রবিবাসরীয় ডার্বিতে চাঁদের হাট
গতকাল অর্থাৎ রবির দুপুরে ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে আয়োজিত হয়েছিল মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গলের হকি ডার্বি। ফুটবল নয়, তবে হকি হলেও সেটা ডার্বি, তাই এদিন স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন দুইদলের অসংখ্য সমর্থক। ভক্ত-সমর্থকদের পাশাপাশি স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন মহারাজ সৌরভ গাঙ্গুলি, রাজ্যের ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, হকি বেঙ্গলের সভাপতি সুজিত বসু সহ ক্রীড়া জগতের বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ। এদিন মাঠে পৌঁছেই সৌরভ ও দুই দলের খেলোয়াড়দের সাথে পরিচয় সারেন সুজিত।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
হকির ফাইনালে শেষ হাসি হাসল মোহনবাগান
ফুটবলের মাঝ মাঠের মতোই এদিন দাপটের সাথে হকি স্টিক হাতে ময়দানে রাজত্ব করেছে বাগানের ছেলেরা। লাল হলুদকে জাত চিনিয়ে পুরনো ছন্দে ফিরেছে বাগান। আর সেই সূত্র ধরেই ম্যাচের শুরুতেই গোল করে বাগানকে 2-0 ব্যবধানে এগিয়ে দেন অর্জুন শর্মা এবং কার্তিক এস।
প্রতিপক্ষের কাছে গোলের মালা পরে, হকি হাতে কিছুটা বাড়তি বেগ পায় লাল হলুদ। পরবর্তীতে ইস্টবেঙ্গলের জামির বাগানের একটি গোল শোধ করেন। তবে সেখানেই হয়তো ইতি টেনেছিল লাল হলুদ। শেষমেশ বাগানের রাহিল মৌসিনের দুরন্ত গলে 3-1 গোলে জয় সুনিশ্চিত করে সবুজ মেরুন।
দুই দলই পেয়েছে পুরস্কার
কলকাতা প্রিমিয়ার হকি লিগের জয়ী দল হিসেবে মোহনবাগান ট্রফি ছাড়াও 3 লক্ষ টাকা পেয়েছে। অন্যদিকে রানার্স আপ হিসেবে ইস্টবেঙ্গল পেয়েছে দু লক্ষ টাকা। তবে বলে রাখি, গোটা প্রতিযোগিতায় সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ইস্টবেঙ্গলের অতুলদীপ 10 হাজার টাকা জিতেছেন। একইভাবে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে মোহনবাগানের অভ্রণ সুদেবও সম সংখ্যক অর্থ জিতেছেন।
ট্রফি জিতেই ইস্টবেঙ্গলকে খোঁচা বাগানের বিদায়ী সচিবের
রবিবার অতি পরিচিত প্রতিদ্বন্দ্বি ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে জয়ের পর বাগান কোচ সিমরনজিৎ সিং বলেন, দলের মধ্যে একতা থাকার কারণেই আমরা জিতেছি। শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও আমাদের একতা আছে। এদিন সিংয়ের কথায়, কোচের কাজ ক্রীড়াবিদের মধ্যে চ্যাম্পিয়নের মানসিকতা তৈরি করা। তিনি সেটা পেরেছেন।
কোচের পর নিজেদের সাফল্য প্রসঙ্গে কথা বলতে বলতে আচমকা ইস্টবেঙ্গলকে খোঁচ দিয়ে বসেন বাগানের বিদায় সচিব দেবাশিস দত্ত। দেবাশিস বলেন, 22 বছর কাটিয়ে হকিতে দল নামিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। গতবার রানার্স হওয়ার পর এবার আমরা চ্যাম্পিয়ন। তবে, শুনছিলাম কোনও এক কর্তা নাকি বলেছেন, তাঁরা ক্রিকেট, ফুটবল, হকি সব ক্ষেত্রেই মোহনবাগানকে হারাচ্ছে। শুধু ISL-এই পারছেন না।
অবশ্যই পড়ুন: বাদ দেয় মুম্বই, চুক্তির বাইরে করে BCCI-ও! অরেঞ্জ জার্সি পরেই উপেক্ষার জবাব দিলেন ঈশান
কী আশ্চর্য দেখুন! ঠিক পরের দিনই মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গল হকিতে হারিয়ে দিল। এইজন্যেই আগে থেকে কিছু বলতে নেই। এদিন, নিজেদের সফলতা স্মরণ করিয়ে লাল হলুদকে নিশানায় এনে ঠিক এমনটাই বলেছিলেন বাগানের বিদায়ী সচিব।