বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগেই বিরাট ধাক্কা খেল ICC! দীর্ঘ 8 বছর পর আয়োজক পাকিস্তানের হাত ধরে ফের মাঠে গড়াবে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি টুর্নামেন্ট। সেই মতো ইতিমধ্যেই ঘর গুছিয়ে ফেলেছে বিভিন্ন দল। ফেব্রুয়ারির প্রথম অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহেই পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে তারা। ভারত অবশ্য হাইব্রিড মডেল মেনে মিনি ওয়াল্ড কাপের ম্যাচগুলি খেলবে দুবাইয়ে। এহেন আবহে বহু প্রতীক্ষিত টুর্নামেন্টের প্রাক্কালে ICC-র চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ থেকে ইস্তফা দিলেন জেফ অ্যালার্ডাইস। মাথায় হাত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার!
ICC সিইও-র পদত্যাগের নেপথ্যে পাকিস্তানের অব্যবস্থা?
বেশকিছু রিপোর্ট মারফত খবর, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি টুর্নামেন্ট শুরু হতে আর মাত্র 3 সপ্তাহ বাকি। এই অল্প সময়ের মধ্যে টুর্নামেন্ট আয়োজনের যাবতীয় কাজ সেরে ফেলতে হবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থাকে। তবে এই কাজের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি রয়েছে যাদের কাঁধে সেই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডই নাকি এখনও স্টেডিয়ামগুলির কাজ সম্পূর্ণ করে উঠতে পারেনি।
শোনা যাচ্ছে, পাক স্টেডিয়ামগুলির সাজসজ্জা থেকে শুরু করে ফিনিশিংয়ের কাজ শেষ হতে এখনও বহু সময় লাগবে। এহেন পরিস্থিতিতে আদৌ পাক ভূখণ্ডে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করা যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ের জাল বেশ চওড়া। প্রশ্ন উঠছে, পিসিবির ভূমিকা নিয়েও। পরিস্থিতি যখন এমন ঠিক সেই মোক্ষম সময়ে পদত্যাগ করলেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলর সিইও অ্যালার্ডাইস। মনে করা হচ্ছে, পাকিস্তানের চূড়ান্ত গাফিলতি ও অব্যবস্থার জন্যই নিজের যাবতীয় দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার এই প্রধান কর্মকর্তা।
ঠিক কী কারণে আচমকা পদত্যাগ করলেন জেফ?
ICC-র বেশ কয়েকটি সূত্র বলছে, গত বছর আমেরিকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে যথেষ্ঠ ভোগান্তি পোয়াতে হয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থাকে। সেবার টুর্নামেন্টের তহবিল নিয়েও উঠেছিল একাধিক প্রশ্ন। ফলত সেই সব নিয়েই যথেষ্ট চাপে ছিলেন জেফ অ্যালার্ডাইস। সমস্যা সমাধানের যাবতীয় দায়িত্ব গিয়ে পড়ে তাঁর কাঁধে। এরই মধ্যে জেঁকে বসে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েন।
তবে শেষ পর্যন্ত তা কেটে গেলেও পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি ও করাচি স্টেডিয়ামের দুরবস্থা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায় ছিলেন জেফ। মনে করা হচ্ছে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির একদম কাছাকাছি পৌঁছে পাকিস্তানের যাবতীয় গাফিলতিকে সামনে রেখেই হয়তো সমস্যা এড়াতে দায়িত্ব ঝেড়ে ফেললেন তিনি। তবে ঠিক কোন কারণে ICC-র গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে নিজেকে সরিয়েছেন জেফ, সে বিষয়ে সংস্থাকেও স্পষ্টভাবে কিছুই জানাননি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার প্রাক্তন সিইও।
প্রসঙ্গত, ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের আরও একটি সূত্র বলছে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে আর্থিক অসংগতির প্রশ্ন এখনও জিইয়ে রয়েছে। সেই চাপের মাঝেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দায়িত্ব ঘাড়ে চাপে অ্যালার্ডাইসের। এদিকে পাকিস্তানে স্টেডিয়াম তৈরির কাজ এখনও অনেকটা বাকি। যা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত ছিলেন ICC কর্তা। বলা বাহুল্য, জয় শাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার চেয়ারম্যান পদে বসার পরই যাবতীয় গোলমেলে ঘটনা আরও প্রকাশ্যে চলে আসে। বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ মনে করছেন, হয়তো সেই কারণেই তড়িঘড়ি নিজের পদ ছাড়লেন জেফ।