প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মোটা মাইনের বেতন থাকলেও ভারতের অধিকাংশ মানুষ মনে করেন তাঁদের জীবনের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য একটি সরকারি চাকরি খুবই প্রয়োজন। তাইতো প্রতি বছর হাজার হাজার যুবক-যুবতী প্রত্যাশা করে থাকেন, তাঁরাও একটি সরকারি চাকরি পাবেন। DA, DR এবং অন্যান্য সরকারি ভাতা মিলিয়ে অনেক সুবিধা পাওয়া যায় সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে। তবে সম্প্রতি জানা গেল এক উচ্চ পদস্থ সরকারি চাকুরেজীবী তাঁর কাজের বাইরেও প্রোমোটিং ব্যবসায় যুক্ত হয়েছে। এবার সেই নিয়ে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার (West Bengal Government Employee Sacked)।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
সরকারি চাকুরিজীবী হয়েও ব্যবসা!
সূত্রের খবর, ২০২০ সালের মার্চ মাসে পশ্চিমবঙ্গ সরকারে কর্মরত এক কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় যে তিনি সরকারের এক উচ্চপদস্থ পদে কর্মরত অবস্থায় একটি রেজিস্টার্ড কোম্পানিতে কাজ করছেন তিনি। যেখানে তিনি মূলত জমি এবং প্রোমোটিং বিষয়ক ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। রাজ্যের প্রশাসনিক ও কর্মিবর্গ দফতরের কাছে চলে আসে সেই গোপন তথ্য। যাবতীয় প্রমাণ হাতে পাওয়ার পর ওই কর্মীকে আত্মসমর্পণের সুযোগ দেওয়া হয়। তার জন্য দু’বার শো কজ চিঠি পাঠিয়ে তাঁকে সুযোগ দিয়েছিল রাজ্য সরকার (West Bengal Government Employee Sacked)। কিন্তু সেই শো কজের ভিত্তিতে যে জবাব অভিযুক্ত দিয়েছিলেন, তাতে একদমই সন্তুষ্ট ছিল না রাজ্য সরকার।
বড় পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের
ওই ব্যক্তির কর্মকাণ্ডের অভিযোগের ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র দফতর তদন্ত শুরু করে। আর সেই তদন্তে দেখা যায় ওই সরকারি কর্মীর নামে একটি নিজস্ব ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে। পাশাপাশি তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখে এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসে। জানা যায়, ওই ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রোমোটিং ব্যবসায়িক আর্থিক লেনদেন হয়েছে। এরপর দীর্ঘ পাঁচ বছরের তদন্ত শেষে তাঁকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসনিক ও কর্মিবর্গ দফতর। গত বৃহস্পতিবার যাবতীয় তদন্তের রিপোর্ট খতিয়ে দেখে ওই ব্যক্তিকে পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। এবং কারণ হিসেবে বলা হয়েছে যে কোনও ধরনের সরকারি পদে চাকরি করার সময় অন্য কোনো ব্যক্তির পক্ষে ব্যক্তিগত কোনও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকা দণ্ডনীয় অপরাধ।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
যেহেতু ওয়েস্ট বেঙ্গল পাবলিক সার্ভিস কমিশন’-এর পরীক্ষা পাশ করেই ওই ব্যক্তি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চাকরিতে যোগদান করেছিলেন সেহেতু তাঁর কর্মকাণ্ডের কথা ‘পাবলিক সার্ভিস কমিশন’কেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এই আবহে সরকারি শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রাইভেট টিউশনের প্রসঙ্গ উঠে আসছে। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি নেতা স্বপন মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘শিক্ষকদের আচরণবিধিতেও পরিষ্কার ভাবে বলা আছে কোনও শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ব্যবসা বা অন্য কোনও পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। কিন্তু বহু শিক্ষক বেপরোয়া ভাবে প্রাইভেট টিউশন করে যাচ্ছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে সরকার কেন ব্যবস্থা নেয় না?’’