বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: চলতি ISL মরসুমের শুরুর দিকে হারের হ্যাট্রিককে নাম জড়িয়ে একপ্রকার ধরাশায়ী হয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তবে সেই দুর্বল লাল হলুদকে একার কাঁধে তুলে ধরেন স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজো। অস্কারের কোচিংয়ে কিছুটা খেই ফিরে পায় মশাল বাহিনী। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলার জামাই তথা বেঙ্গালুরু এফসি-র সুনীল ছেত্রীর গোলে তরী ডুবল ইস্টবেঙ্গলের। 1 গোলে এগিয়ে থেকেও জেতা ম্যাচে পরাস্ত হয়ে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের চলতি মরসুমের যাত্রা শেষ করল কলকাতা ময়দানের প্রধান দল ইস্টবেঙ্গল। তবে অস্কারদের হারের মূল কারণ কী? উত্তর খুঁজেছে India Hood।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
দুর্বল রক্ষণভাগ
দুরন্ত ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণভাগের মূল কর্তা যে আনোয়ার আলি এ কথা সর্বজনবিদিত। তবে চলতি মরসুমে জোরালো চোট পেতেই দল থেকে ছিটকে যান আনোয়ার। আর এরপরই ক্রমশ রক্ষণভাগ আলগা হয়ে যেতে থাকে ইস্টবেঙ্গলের। যদিও দলের রক্ষণকে শক্ত হাতে ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলেন দলের বাকিরা।
নিশু কুমার থেকে শুরু করে দিয়ামান্তোকোস সকলেই দলের দুঃসময়ে নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করেছেন। তবে দলের ছেলেদের আমরণ চেষ্টা সত্ত্বেও বারংবার শত্রু পক্ষের সামনে আলগা হয়ে গিয়েছে লাল হলুদের রক্ষণভাগ। আর এই রক্ষণ যন্ত্রনা নিয়েই গতকাল বেঙ্গালুরুর সামনে মুখ থুবড়ে পড়েছে ইস্টবেঙ্গল।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
দলে ছেলেদের চোট
চলতি মরসুমে প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে পরাস্ত হওয়ার আগেই চোটের কাছে মাথা ঝুঁকিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। এ মরসুমে চোট যেন পিছু ছাড়েনি লাল হলুদদের। ইন্ডিয়ান সুপার লিগের চলমান সিজনের শুরুর দিকে একের পর এক ম্যাচে চোট পেয়েছেন লাল হলুদের পরিচিত মুখেরা।
তাবড় তারকা রিচার্ড সেলিস, মাদিহ তালাল, হেক্টর ইউস্তে, আনোয়ার আলি থেকে শুরু করে বিষ্ণু, নন্দকুমার প্রায় সিংহভাগই চোটের কারণে দল থেকে ছিটকে যান। যদিও পরবর্তীতে চোট কাটিয়ে অনুশীলনে ফিরেছেন অনেকেই। তবে চলমান মরসুমে চোটের কারণে একপ্রকার ভাঙা দল নিয়েই শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। সূত্র বলছে, এই চোটের কারণেই ISL 2024-25 মরসুমে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে মশাল বাহিনীর।
খেলোয়াড়দের ছন্নছাড়া ফুটবল
চলতি মরসুমের শুরুর দিকে কার্লেস কুয়াদ্রাতের অধীনে একাধিক ভুল ফুটবল খেলেছে ইস্টবেঙ্গল। একেবারে শুরু থেকে দলের ছেলেদের ছন্নছাড়া ফুটবল শত্রু শিবিরের কাছে সুযোগ হয়ে উঠেছিল। সাথে রয়েছে সুযোগ নষ্টের রোগ ও রক্ষণ যন্ত্রণা। আর এইসব শূন্যস্থানকে কাজে লাগিয়েই বারংবার মোহনবাগানের মতো শত্রুরা ইস্টবেঙ্গলের ঘাড়ে ছুরি বসিয়েছে। এক কথায়, দলের ছেলেদের চেষ্টা থাকলেও মূলত প্রথমার্ধে গোছানো ফুটবলের অভাব থাকায় চলতি লিগে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে লাল হলুদরা।
দল গোছাতে পর্যাপ্ত সময় পাননি অস্কার
কোচ কুয়াদ্রাতের আমলে ইস্টবেঙ্গলের ধারাবাহিক ব্যর্থতার পর লাল হলুদের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব গিয়ে পড়ে স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোর ওপরে। ইস্টবেঙ্গলের বিগত ম্যাচ পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে দেখা যাবে, অস্কারের কাঁধে দায়িত্ব আসতেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে লাল হলুদ। তবে সূত্র বলছে, বিগত ম্যাচগুলিতে জয়ের পরও ইস্টবেঙ্গলের ব্যর্থতার নেপথ্যে রয়েছে সময়ের অভাব।
অবশ্যই পড়ুন: ভারতের বিরুদ্ধে নামার আগেই বড় ঝটকা খেল অস্ট্রেলিয়া! বাদ তারকা প্লেয়ার
হ্যাঁ, ওয়াকিবহাল মহল মনে করছেন, কুয়াদ্রাতের পর নিজের মতো করে দল গুছিয়ে তোলার পর্যাপ্ত সময় পাননি ব্রুজো। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, শুরুর দিকে কুয়াদ্রাত দায়িত্ব ছেড়ে দেশে পাড়ি দিলে সেই সময় অস্কারের হাতে দল গঠনের পর্যাপ্ত সময় ছিল না। ফলত, দলের অবস্থা বুঝে ওঠার আগেই 3 ম্যাচে গো হারা হারে মশাল ব্রিগেড। শেষ পর্যন্ত, এই ব্যর্থতাই সেরা ছয়ে ওঠার লক্ষ্যে ইস্টবেঙ্গলের মূল বাধা হয়ে দাঁড়াল।