ভারতীয় রেল এক নতুন মাইলফলকের দিকে এগোচ্ছে। এবার বারাণসী থেকে হাওড়া পর্যন্ত ৭৬০ কিলোমিটার পথ মাত্র ২ ঘণ্টায় অতিক্রম করতে পারবে দেশের দ্বিতীয় বুলেট ট্রেন। কেন্দ্র সরকারের এই উচ্চগতিসম্পন্ন রেল প্রকল্প পূর্ব এবং উত্তর ভারতের মধ্যে যোগাযোগের গতি ও মানে বড়সড় পরিবর্তন আনবে। তবে পরিষেবা কবে থেকে শুরু হবে? বিস্তারিত জানতে পড়ে ফেলুন পুরো প্রতিবেদন।
কেমন হবে এই রুট?
রেল সূত্রে জানা গেছে, বুলেট ট্রেনটি চলবে বারাণসী, বক্সার, আরা, পাটনা, গয়া, ধানবাদ, আসানসোল, দুর্গাপুর, বর্ধমান হয়ে শেষ গন্তব্য হাওড়া পর্যন্ত। এই রুট শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং পর্যটন, ব্যবসা, শিক্ষা এবং সামগ্রিক উন্নয়নের এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে বলেই মনে করছে রেল কর্তৃপক্ষ।
রুটের দৈর্ঘ্য ও নির্মাণ পরিকল্পনা
পুরো রুটের দৈর্ঘ্য হবে ৭৬০ কিমি, যার মধ্যে ২৬০ কিমি এলিভেটেড ট্র্যাক হিসেবে তৈরি করা হবে, বিশেষ করে বিহার অংশে। এই অংশে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে নির্মাণ হবে, যাতে ট্রেনের গতি ও নিরাপত্তা – দুটোই বজায় থাকে।
ট্রেনের গতি ও যাত্রার সময়
এই বুলেট ট্রেনের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ গতি হবে ৩৫০ কিমি/ঘন্টা। ফলে বারাণসী থেকে হাওড়া পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র ২ ঘণ্টা। তবে কিছু ক্ষেত্রে যাত্রা সময় বেড়ে সাড়ে ৩ ঘণ্টা হতে পারে। ব্যবসায়িক কিংবা ব্যক্তিগত যাত্রা – সব ক্ষেত্রেই এই ট্রেন হবে এক নতুন গেমচেঞ্জার।
সমীক্ষা ও প্রকল্প রিপোর্ট
ডিটেলড প্রজেক্ট রিপোর্ট (DPR) তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। বিহার অংশে জমি চিহ্নিতকরণ এবং সমীক্ষা কার্যক্রম অনেকটাই এগিয়ে গেছে। রুটে অবস্থিত প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের রেল পরিকাঠামো উন্নয়নেরও পরিকল্পনা চলছে।
কবে শুরু হবে যাত্রী পরিষেবা?
যদিও চূড়ান্ত উদ্বোধনের তারিখ এখনো ঘোষণা হয়নি, তবে রেল মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন যে, ২০২৭ সালের মধ্যেই এই প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর আগে মহারাষ্ট্র-গুজরাট বুলেট ট্রেন প্রকল্পে লাইন পাতার কাজ চলছে, এবং সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই এবার পূর্ব ভারতেও দ্রুতগতির রেল আসছে।
এই বুলেট ট্রেন পরিষেবা শুধু সময়ই বাঁচাবে না, বরং ভারতের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে আনবে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। ভবিষ্যতের রেলযাত্রা হতে চলেছে আরও দ্রুত, আরও আধুনিক।