সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: নতুন বছরের শুরুতেই বাজারে স্বস্তির আর হাওয়া বইতে চলেছে। ঠিক পয়লা বৈশাখের মুখেই সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটালো ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI)। দেশের মুদ্রানীতির সর্বশেষ বিশ্লেষণে আরবিআই জানিয়েছে যে, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে মুদ্রাস্ফীতির হার (Inflation Rate) গড়ে ৪ শতাংশ নীচে নামবে। আর এর ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অনেকটাই কমবে বলে মনে করছে উপর মহলের লোকজন।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
কী জানাল রিজার্ভ ব্যাংক?
৯ই এপ্রিল বুধবার মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকের শেষে আরবিআই এর গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই বছর মুদ্রাস্ফীতির হার ২০ বেসিস পয়েন্ট কমবে। যেখানে এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকের পূর্বাভাস ছিল ৪.৫%, আর এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩.৬%। এছাড়া জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসের সূচকও ৪% থেকে কমে ৩.৯%-এ নামতে পারে।
শুধু তাই নয়, অক্টোবর-ডিসেম্বরে মুদ্রাস্ফীতির হার ৩.৮% থাকার সম্ভাবনা দিয়েছেন তিনি। এছাড়া জানুয়ারি-মার্চ ২০২৬-এ এই সূচক কিছুটা বাড়তে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। তখন এই হার ৪.৪% এর কাছে পৌঁছাতে পারে। এর মানে, আর্থিক বছরের প্রথমভাগে বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অনেকটাই কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বছরের শেষে কিছুটা চাপ বাড়তে পারে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
কী কারণে কমছে জিনিসের দাম?
রিজার্ভ ব্যাংক মনে করছে, খাদ্য ও পণ্যের দাম প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত হারে তলানিতে ঠেকছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম অনেকটাই কমে গিয়েছে। তবে আরবিআই সতর্ক করেছে যে, আন্তর্জাতিক অনিশ্চয়তা এবং আবহাওয়ার প্রভাব ভবিষ্যতে ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
আর্থিক বৃদ্ধিতে ধাক্কা
একদিকে যেমন মুদ্রাস্ফীতির হার কমেছে, অন্যদিকে আর্থিক বৃদ্ধির হার কিছুটা কমার ইঙ্গিত দিল আরবিআই। আগের পূর্বাভাস ছিল, এবার জিডিপি ৬.৭% হারে বাড়বে। তবে নয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, ৬.৫% হারে বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছে আরবিআই।
সাধারণ মানুষ কীভাবে উপকৃত হবেন?
দেখুন, বাজারে সবজি, চাল, ডাল, তেল এই সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমা মানেই সাধারণ মানুষের পকেটের চাপ কমা। ফলে জ্বালানির দামেও কিছুটা পতন আসতে পারে। পাশাপাশি ইএমআই কিংবা ব্যাংক ঋণে সুদের হারের কিছু পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
পয়লা বৈশাখের ঠিক আগে রিজার্ভ ব্যাংকের এই ঘোষণার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে সাধারণ মানুষ। একদিকে যেমন মুদ্রাস্ফীত হ্রাস, অন্যদিকে বাজারে জিনিসের দাম কমার সম্ভাবনা, এই দুই মিলেই উৎসবের আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে।