বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: সোমবার ঘরের মাঠ যুবভারতীতে সুদে-আসলে হিসেব মিটিয়ে দিয়েছে মোহনবাগান (Mohun Bagan Super Giant)। খালিদ জামিলের ছেলেদের প্রথম সেমির অপমান যেন এক লহমায় মিটে গিয়েছে বাগানের। গতকাল, দুই প্রতিদ্বন্ধীর রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের সাক্ষী থাকতে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ঢল নেমেছিল ভক্ত-সমর্থকদের। যদিও সেখানে সিংহভাগই ছিল সবুজ মেরুন সমর্থক।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
বলা ভাল, সেই শুভাকাঙ্ক্ষীদের উচ্ছাসকে সম্মান জানিয়ে জামশেদপুরকে একেবারে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন অপুইয়ারা। যার জেরে একটানা 3 বারের মতো ISL ফাইনালে জায়গা চূড়ান্ত হয়েছে কলকাতা ময়দানের এই প্রধানের। চলুন জেনে নেওয়া যাক সোমবার বাগানের একতরফা জয়ের প্রধান কারণ কোনগুলি।
মানবীর-অপুইয়াদের দলে ফেরা
ইন্ডিয়ান সুপার লিগের গোটা মরসুমের গোছানো ফুটবল খেলে পয়েন্ট তালিকার মগডালে জায়গা ধরে রেখেছে মোহনবাগান। মরসুমের একেবারে শুরুর দিকটা ভাল না গেলেও ধীরে ধীরে শক্তি বাড়িয়েছে সবুজ মেরুন। এ মরসুমে কার্যত অপ্রতিরোধ্য ফুটবল খেলে লিগ শিল্ড নিশ্চিত করার পাশাপাশি সেমির মঞ্চে আসন পাকা করেছিল হোসে মোলিনার দল।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
তবে সেমির প্রথম আসরে মাঠে সেরা একাদশ না থাকায় জামশেদপুরের কাছে হারতে হয় বাগানকে। সেদিন চোট সমস্যার কারণে দলে ছিলেন না বাগানের দুই দিগপাল মনবীর সিং ও আপুইয়া। তবে কোচ মোলিনা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সেমিতে একেবারে ভিন্নরূপে দেখা যাবে মোহনবাগানকে।
গতকাল ঠিক সেটাই হয়েছে। চোট যন্ত্রণা কাটিয়ে অপুইয়ারা দলে ফিরতেই একেবারে জাত চিনিয়ে দিয়েছে মোহনবাগান। কাজেই বলা যায়, গতকাল বাগানের জয়ের রাস্তাটা অনেকটাই সহজ করেছে আপুইয়ার দাবানল গতির গোল। অন্যদিকে বাগানের ডান প্রান্তের ভরসা মানবীরের উপস্থিতিতে একেবারে আটঘাট বেঁধে নেমেছিল বাগান। যা গতকালের একতরফা জয়ের অন্যতম কারণ।
শক্ত রক্ষণভাগ
গোটা মরসুমেই শক্ত হাতে বাগানের রক্ষণভাগ ধরে রেখেছিলেন শুভাশিস বসু ও আশিস রাইরা। গতকালের ম্যাচেও একই চিত্র ধরা পড়েছে। সোমবার জামশেদপুরের সামনে শুভাশিস বসুরা যেভাবে দূর্গ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তাতে বাগানের রক্ষণ ভেঙে গোল করাটা একেবারে দুঃসাধ্য হয়ে গিয়েছিল। গত কাল একই ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল দলের অনেককেই। মোদ্দা কথা, সবুজ মেরুনের কঠিন রক্ষণভাগের কারণে গতকাল এক চুল সুযোগ পায়নি প্রতিপক্ষ।
কোচ মোলিনার পরিকল্পনা
মোহনবাগানের কোচ হওয়ার আগে স্পেনের ফুটবল সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন তিনি। এহেন একজন সুদক্ষ কারিগরকে দলের দায়িত্ব দিয়ে বাগানের যে কতটা উপকার হয়েছে তা হারে হারে টের পাচ্ছে বাকিরা। গত লেগে জামশেদপুরের কাছে পরাস্ত হয়েই কার্যত হুঙ্কার ছেড়েছিলেন মোলিনা। বাগান কোচ জানিয়েছিলেন, পরবর্তী সেমিফাইনালে একেবারে ভিন্ন চেহারায় দেখা যাবে মোহনবাগানকে। তবে একথা বলেই থেমে থাকেননি তিনি। ঘরের মাঠে দলকে বড় সাফল্য পাইয়ে দিতে একেবারে দিনরাত এক করে পরিকল্পনা ফেঁদে গিয়েছেন মোলিনা। বুদ্ধি করে দলে টেনে নিয়েছেন দুই তাবড়কে। আর তাতেই এসেছে সাফল্য।
অবশ্যই পড়ুন: সুপার কাপে দুর্ধর্ষ লড়াই, কোয়ার্টারেই মুখোমুখি হতে পারে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান! দেখুন সূচি
অস্ত্র ঘরের মাঠ
গতকাল ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগিয়েছে মোহনবাগান। প্রথম সেমিতে ইস্পাত নগরীর DRD টাটা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে হারের পর ঘরের মাঠকে কাজে লাগাতে একেবারে উঠে পড়ে লেগেছিল সবুজ মেরুন। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, সোমবার বাগানের একতরফা জয়ের নেপথ্যে রয়েছে ঘরের মাঠের আবহাওয়া। বলে রাখি, চলতি মরসুমে মুম্বইয়ের ড্র ম্যাচ ছাড়া প্রায় সিংহভাগ ম্যাচেই ঘরের মাঠে জয় পেয়েছে মোহনবাগান।