শ্বেতা মিত্র, কলকাতা: যত সময় এগোচ্ছে ততই যেন বিশ্বের সবথেকে উঁচু পর্বত মাউন্ট এভারেস্ট নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে উঠে আসছে। কয়েকদিন আগেই খবর উঠে এসেছিলো যে এভারেস্টের থেকেও দুটি উঁচু পর্বতমালার খোঁজ মিলেছে। কিন্তু এবার যে খবর সামনে এল তা রীতিমতো বিজ্ঞানীদের রাতের ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন। মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা (Mount Everest Height) নাকি এক ধাক্কায় অনেকটা কমে গিয়েছে। হ্যাঁ সম্প্রতি এমনই তথ্য প্রকাশ্যে উঠে এসেছে। সত্যিই কি তাই? বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই প্রতিবেদনটির ওপর।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
উচ্চতা কমছে এভারেস্টের!
আসলে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় উল্লেখযোগ্যভাবে তুষারপাতের পরিমাণ কমছে। ২০২৪-২৫ সালে শীতেও তুষারপাত কম হয়েছে বলে খবর। স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা পার্থক্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে গবেষকরা এই ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারির প্রথম দিকের স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে ২০২৪ এবং ২০২৫ উভয় সময়েই জানুয়ারির মধ্যে তুষাররেখা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিকোলস কলেজের পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং হিমবাহ নিয়ে গবেষণা করা হিমবাহবিদ মাউরি পেল্টো একটি ব্লগ পোস্টে এমনটাই লিখেছেন।
বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে তুষারপাতের ক্রমবর্ধমান রেখা দেখায় যে জলবায়ু বিপজ্জনক পর্যায়ে উষ্ণ হচ্ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা ৮,৮৪৯ মিটার এবং হিমালয়ের এই শৃঙ্গটি নেপাল এবং তিব্বতের মধ্যে অবস্থিত।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
প্রতিদিন ২.৫ মিমি বরফ ক্ষয়
পেল্টোর মতে, বরফের সরাসরি বাষ্পে রূপান্তরের ফলে প্রতিদিন ২.৫ মিমি পর্যন্ত বরফ ক্ষয় হতে পারে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে নেপালে স্বাভাবিকের চেয়ে ২০-২৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছিল, যদিও পূর্বে শুষ্ক পরিস্থিতি বজায় ছিল। তাপমাত্রাও গড়ের উপরে ছিল। বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্ষণ করেছেন যে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ক্রমাগত উষ্ণ অবস্থার কারণে ডিসেম্বরের শুরু থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির শুরু পর্যন্ত তুষারপাতের রেখা বেশি ছিল এবং ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে।
গবেষকদের মতে, প্রতি শীতকালে এই অঞ্চলে কিছু তুষারপাত হয়। কিন্তু তুষারপাত বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না, যার অর্থ হল মাউন্ট এভারেস্টে ৬,০০০ মিটারেরও উপরে হিমবাহ গলে যেতে থাকে। পেল্টোর মতে, শীতকালে এই উচ্চতায় তুষার স্তর হ্রাস মূলত বেশ কিছু কারণের ফলে ঘটে, যেখানে তুষার কেবল জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়।পেল্টো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সাম্প্রতিক শীতকালে উষ্ণ এবং শুষ্ক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০২১, ২০২৩, ২০২৪ এবং ২০২৫ সালের শীতকাল, যার ফলে তুষারপাত কমে যাচ্ছে। যাইহোক, বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ নিয়ে এমন তথ্য যথেষ্ট উদ্বেগের সেটা বলাই বাহুল্য।