সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: নতুন অর্থবছরের শুরুতেই বিরাট ঘোষণা কেন্দ্রের। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক সরকারের কোষাগার থেকে প্রায় ২.৫ লক্ষ কোটি টাকার একটি সারপ্লাস (RBI Surplus) ট্রান্সফার করতে চলেছে বলে শোনা যাচ্ছে। আর যদি এই তথ্য সঠিক হয়, তাহলে এটি হবে রিজার্ভ ব্যাংকের ইতিহাসের সবথেকে বড় ট্রান্সফার, যা কেন্দ্রীয় সরকারের কোষাগারের ঘাটতি মেটাতে প্রচুর সাহায্য করবে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
আগেও মিলেছিল বড় অঙ্কের সারপ্লাস
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, এর আগেও ২০২৪ সালের মে মাসে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক ২.১ লক্ষ কোটি টাকা একটি সারপ্লাস কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে তুলে দিয়েছিল। আর এবার সেই টাকার অঙ্ক আরো বাড়তে চলেছে, যা মোদি সরকারের আর্থিক পরিকল্পনার দিক থেকে নিঃসন্দেহে সেরা পদক্ষেপ।
বেশ কিছু সূত্র দাবি করছে, এবারের বাজেটে সরকার ২.২ লক্ষ কোটি টাকা আশা করেছিল। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাংক যদি ২.৫ লক্ষ কোটি টাকার সারপ্লাস দেয়, তাহলে প্রত্যাশার থেকেও বেশিন অর্থ সরকারের হাতে আসবে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
কেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সরকারের হাতে টাকা তুলে দেয়?
অনেকের মনে এবার প্রশ্ন আসতে পারে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কেন সরকারের হাতে টাকা দেয়? আসলে এর পেছনে রয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অ্যাক্ট, ১৯৩৪-এর সেকশন ৪৭। হ্যাঁ, সেখানে স্পষ্ট বলা আছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের খরচ ও রিজার্ভ বাদ দিয়ে যত টাকা লাভ হয়, তার পুরোটাই সরকারের কোষাগারে জমা করতে হবে।
আর এর কারণ হিসাবে জানা যাচ্ছে, ভারত সরকারই আরবিআই এর একমাত্র মালিক। রিজার্ভ ব্যাংক সাধারণত সরকার এবং বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে প্রচুর ঋণ দিয়েম সরকারি বন্ড কিনে এবং বিদেশের মুদ্রা বিনিয়োগ করেই এই বিশাল পরিমাণে টাকা আয় করে। আর এটাই সারপ্লাসের মূল উৎস।
আর্থিক অবস্থায় দেখা যাবে আশার আলো
এই বিপুল পরিমাণ অর্থ যদি সরকারের হাতে পৌঁছায়, তাহলে একদিকে যেমন রাজস্বের ঘাটতি মিটবে, তেমনি একদিকে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী হবে। এও অনুমান করা হচ্ছে, যে বাজারে টাকার সহজলভ্যতা বাড়বে এবং শিল্পায়নের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
১৭ই এপ্রিল ৪০০০০ কোটি টাকার বন্ড কিনবে রিজার্ভ ব্যাংক
এরই মধ্যে আরেকটি বিরাট ঘোষণা সামনে এসেছে। জানা যাচ্ছে, আগামী ১৭ই এপ্রিল আরবিআই ৪০ হাজার কোটি টাকার সরকারি বন্ড কিনবে। এও শোনা যাচ্ছে, যে তারা এই বন্ড কিনবে ওপেন মার্কেট অপারেশনের মাধ্যমে। আর এর ফলে ব্যাংকগুলির হাতে নগদের পরিমাণ আরো বাড়বে আর গোটা অর্থনৈতিক খাতে বিরাট পরিবর্তন আসবে।
তবে জানিয়ে রাখি, এর আগেও ঘোষণা করা হয়েছিল যে, এপ্রিল মাসে ৮০ হাজার কোটি টাকার সরকারি বন্ড চারটি কিস্তিতে কেনা হবে। আর এখন তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে আরো ৪০ হাজার কোটি টাকার বন্ড। এখন দেখার বিষয়, এই আর্থিক সহায়তা সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প এবং উন্নয়নমূলক কাজে ঠিক কতটা গতি আনতে পারে।