লেটেস্ট খবর অটোকার আবহাওয়া খাওয়া -দাওয়া খেলা গ্যাজেট চাকরি জীবনযাপন জ্যোতিষ টেলিকম নিউজ প্রযুক্তি বিনোদন মোবাইল রাশিফল সৌন্দর্য স্কিমস স্বাস্থ্য ও ফিটনেস

Who Is Rani Bhavashankari: মুঘলদের যম ভবশঙ্করীর ভূমিকায় শুভশ্রী, বাংলার এই বীরাঙ্গনা রানির আসল কাহিনী গায়ে কাঁটা দেবে | Subhashree Ganguly New Movie Raybaghini Bhavashankari

Updated on:

পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ সময়ের সাথে মানুষের রুচি যেমন বদলেছে তেমনি টলিউডও নিজের ধাঁচ বদল করছে দর্শকদের মনের মত করে। একটা সময় যেখানে কমার্শিয়াল ছবিতেই হাউসফুল হত সেখানে নতুন ধারার চিন্তাভাবনা থেকে ঐতিহাসিক পটভূমিতে রচিত একাধিক সিনেমা আজ যেমন প্রশংসিত তেমনি সফল। সম্পর্কিত বাংলার আরও এক বাঙালি নারী শক্তির কাহিনী বড়পর্দায় আসছে বলে জানা গিয়েছে। যেখানে নায়িকার চরিত্রে দেখা যাবে পরিচালক রাজ চক্রবর্তী পত্নী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়কে।


আমাদের সাথে যুক্ত হন

Join Now

ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবির পোস্টার শেয়ার করেছেন শুভশ্রী। যা নিমেষের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। অনেকেই গতানুগতি ধারার বাইরে বাংলা ছবি তৈরিকে প্রশংসা করেছেন। আবার অনেকের মনেই প্রশ্ন জগতে শুরু করেছে কেন এই রানি ভবশঙ্করী (Bhavashankari)? আজকের প্রতিবেদনেই রইল আপনাদের প্রশ্নের উত্তর।

কে এই রানি ভবশঙ্করী? | Who Is Rani Bhavashankari ?

বাংলার মানুষের কাছে রানি ভবশঙ্করী নামটা সেভাবে পরিচিত নয়। তবে অবিভক্ত বাংলার মুসলমান শাসকদের কাছে ছিল আতঙ্কের সমান। কিন্তু কেন? চলুন শুরু থেকেই শুরু করা যাক। বর্তমানের হাওড়া ও হুগলি জেলা নিয়েই ছিল অতীতের ভূরিশ্রেষ্ঠ সাম্রাজ্য। সেখানেই জন্ম হয়েছিল রানি ভবশঙ্করীর, জন্মসূত্রে নাম দেওয়া হয়েছিল ভবশঙ্করী চৌধুরী। তাঁর পিতা ছিলেন ভূরিশ্রেষ্ঠ সাম্রাজ্যের দুর্গরক্ষক ও সেনার যুদ্ধ বিদ্যার প্রশিক্ষক। পিতার থেকেই যুদ্ধ বিদ্যা, ঘোড়ায় চড়া শিখেছিলেন, এমনকি যুদ্ধ অভিযান থেকে শিকারেও যেতেন।

READ MORE:  ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে বাঙালির আবেগ মিলেমিশে পুজোর বক্স অফিস কাঁপাতে তৈরি ‘গোলন্দাজ’ 

যুদ্ধবিদ্যা থেকে শাস্ত্রজ্ঞানে সবক্ষেত্রেই ছিল সমান দখল

শুধুই যুদ্ধ বিদ্যা নয়, সেই সময়ের শ্রেষ্ঠ পন্ডিতের থেকেই সমাজশাস্ত্র, রাজনীতি, কূটনীতি, দর্শন ও ধর্মশাস্ত্রের শিক্ষা নিয়েছিলেন। মাতৃ বিয়োগের পর তাঁর পিত বিয়ের চেষ্টা শুরু করলে ভবশঙ্করী শর্ত রাখেন তাকে তলোয়ারে হারাতে পারলে তবেই সেই পুরুষকে বিয়ে করবেন। যদিও সেই শর্ত বজায় থাকেনি, পরবর্তীতে রাজা রুদ্রনারায়ণের বিয়ে হয়। শিকারে গিয়ে তাঁর দুর্ধর্ষ তলোয়ার চালানো দেখে মুগ্ধ হয়ে রাজা বিয়ের প্রস্তাব দেন। এর কিছু পরেই গড় ভবানীপুর দুর্গের কাছে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। এভাবেই তিনি রানি ভবশঙ্করী হয়ে ওঠেন।

দেবী চন্ডির ভক্ত ভবশঙ্করী বিয়ের পর রাজপ্রাসাদের পাশে তিনি একটি চন্ডি মন্দির নির্মাণ করেন। হাওড়া ও হুগলি জেলার যে সমস্ত মেলাই চন্ডি ও বেদাই চন্ডি পুজো হয় তা রানির দৌলতেই শুরু হয়েছিল। এছাড়া ভুরিশ্রেষ্ঠ সাম্রাজ্যের সুরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে খানাকুল, ছাউনপুর, তমলুক, আমতা, উলুবেড়িয়া ও নস্করডাঙ্গায় দুর্গ নির্মাণ করেন তিনি। তিনিই প্রথম সেনাবাহিনীতে মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেন ও সামাজ্যের প্রতিটি পরিবারের একজনকে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেন। যাতে আপদকালীন সময়ে যুদ্ধে যোগ দিতে পারে। তার প্রশাসনিক দক্ষতায় পূর্ব বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুরে বিস্তার লাভ করে সাম্রাজ্য।

READ MORE:  Prosenjit Chatterjee: অভিনয়ের পর এবার নয়া ভূমিকায় ধরা দিচ্ছেন প্রসেনজিৎ! রইল বড় চমক | Prosenjit Chatterjee Going To Produce Hindi Serial

পাঠানসেনাকে পরাজিত করেন রানি ভবশঙ্করী

তৎকালীন সময় গৌড়ের শাসক সুলেমান কারি। মুসলিম সমাজের লুটেরা বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় লুটপাট চালাতো। তাদের দমনে  রানির পরামর্শে ওড়িশার রাজা মুকুন্দদেবের সাথে জোট বাঁধেন রাজা রুদ্র নারায়ণ। এরপর ত্রিবেণীর যুদ্ধে মুকুন্দদেব ও ভুরিশ্রেষ্ঠ সমাজের সেনাবাহিনী গৌড়ের সুলতান সুলেমান কারিকে পরাজিত করে। পরবর্তীতে সুলেমান কারির পুত্র দাউদ খান মুঘলদের পরাজিত করতে রুদ্র নায়ারণের সাহায্য  চেয়ে না পেলে ভুরিশ্রেষ্ঠ সাম্রাজ্য আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। যদিও তাতে বাজেভাবে পরাজিত হন।

ত্রিবেণীর যুদ্ধের পর এক পুত্রের জন্মদেন রানি ভবশঙ্করী। কিন্তু পুত্রের বয়স ৫ বছর হতেই রাজা রুদ্রনারায়ণ মারা যান। এরপর রাজপুত্র পূর্ণবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত রাজ্যের শাসনভার তাঁর কাঁধে তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন কুলপুরোহিত। তবে তার আগে ৩ মাস নিজেকে প্রস্তুত করার সময় চেয়ে নিয়ে রাজ্যের ভার সেনাপতি চতুর্ভুজ চক্রবর্তীকে দিয়ে মহিলা সেনাকে নিয়ে মহাদেব মন্দিরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। এদিকে রাজ্য দখলের উদ্দেশ্যে রানি ও তার নাবালক পুত্রকে হত্যার জন্য অসমান খানকে সব তথ্য দেয়। এরপর পাঠান সেনা আক্রমণের জন্য ছদ্মবেশ নিয়ে ভুরিশ্রেষ্ঠ সমাজে প্রবেশ করে। যদিও সেই খবর গোয়েন্দারা ঠিকই পেয়ে যায় ও রানিকে সতর্ক করে দেন। রাতের অন্ধকারে তাকে আক্রমণ হলে পাঠান সেনাদের খন্ড বিখন্ড করে দেয় রানি ও তাঁর মহিলা সেনা। কোনোমতে প্রাণ বাঁচিয়ে পালতে সক্ষম হন অসমান খান। এদিকে প্রমাণ না থাকায় চতুর্ভুজ চক্রবর্তীকে কোনো শাস্তি দিতে পারেননি রানি।

READ MORE:  Web Series: মিস করা যাবে না, সাড়া জাগানো ১০টি ভারতীয় ওয়েব সিরিজ!

এরপর রাজ্যের দায়িত্ব নিজের হাতে নেন। তারপর চতুর্ভজকে সরিয়ে ভুপতি কৃষ্ণ রায়কে সেনাপতি করেন। সাম্রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সেনা প্রশিক্ষণের শিবির তৈরি করেন যা তিনি নিজেই তদারকি করতেন। এরপর মাশুরি গ্রামের ভবানী মন্দিরে রাজ্যাভিষেকের দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়। এদিকে ফের রানিকে হত্যার চক্রান্ত করে চতুর্ভুজ ও অসমান। আবারও আক্রমণ করতে রাতের অন্ধকারে খানাকুলে পৌঁছায় সেনা। খবর পেয়েই যুদ্ধের জন্য সেনাদের ডেকে পাঠান রানি ভবশঙ্করী। এরপর আক্রমণ করা হলে মাত্র কয়েকঘন্টার মধ্যেই পাঠান সেনা শেষ হয়ে যায়। তারপর রাজ্যভিষেক হয়।

আকবরের থেকে মেলে ‘রায় বাঘিনী’ উপাধি

রানি  বা ভবশঙ্করীর এই বীরত্বের কথা সম্রাট আকবরের কানে পৌঁছাতেই তিনি মিত্রতার হাত বাড়িয়ে দেন। আসলে পাঠানরা মোঘল সাম্রাজ্যেকে অস্বীকার করে যত্রতত্র লুটপাট চলতো। তাই পাঠানদের পরাজিত করা রানি ভবশঙ্করীর কাছে মান সিংহকে পাঠান ও চুক্তি সম্পন্ন করে ভুরিশ্রেষ্ঠ সাম্রাজ্যকে সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি দেন। এরপর রানি ভবশঙ্করীকে ‘রায় বাঘিনী’ উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৫৫০ থেকে ১৬০০ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন তিনি। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে রানি ভবসংকরি প্রতিষ্ঠিত ‘রায় বাঘিনী’ মন্দির এখনো রয়েছে।

About Author
Oindrila Sen

Oidrila Graduated in Masscom from Delhi Univercity, and Works as Content Curator at Kolkata Trend. Curate Content in various category like Bengali News, Entertainment, Tech Update, Lifestyle Update, Celebrity Gossip, Crypto Currency, Job Update and Many More.