প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বছর ৯ আগস্ট দ্বিতীয় বর্ষের চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হয় আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে। যা নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। তদন্তের দায় ভার গ্রহণ করেছিল CBI। সেই সূত্রেই সামনে আসে আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ। সেই মামলায় আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ, বিপ্লব সিং, আফসার আলি , সুমন হাজরা, আশিস পাণ্ডেকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তবে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দণ্ডিত করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ। কিন্তু পুরোপুরি মেটেনি মামলা।
আমাদের সাথে যুক্ত হন
Join Now
নির্যাতিতার পরিবারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ CBI এর আইনজীবি
আরজি কর কাণ্ডে হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি করে তরুণী চিকিত্সক ও খুনের মামলার তদন্ত শুরু করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI। সেই তদন্তের ভিত্তিতে যখন অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা শুনিয়েছে নিম্ম আদালত, তখন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় নির্যাতিতার পরিবার। তাঁদের অভিযোগ CBI সঠিকভাবে তদন্তের দায়িত্ব পালন করেনি। সেই বিষয়ে গত বুধবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চে মামলাটি উঠলে তীব্র প্রতিবাদ জানায় CBI এর আইনজীবী সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা। এদিন তুষার মেহতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, ‘নির্যাতিতার পরিবারে যে আবেদন করেছে, সেই আবেদনের শুনানি হলে মামলায় বড় প্রভাব পড়বে। অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় বাড়তি সুবিধা পেতে যেতে পারে’।
হাইকোর্টে রি-ট্রায়ালের আবেদন নির্যাতিতার পরিবারের
এই প্রসঙ্গে নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীর কাছে প্রধান বিচারপতি জানতে চান, নির্যাতিতার পরিবার যে আবেদন করেছেন, তাতে তাঁরা অনড় থাকবেন কিনা। নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘আমরা মুখবন্ধ খামে আমাদের বক্তব্য জানিয়েছি। কিন্তু কিছু বিষয়টি আমরা আলোচনা চাই’। এরপরই নতুন করে আবেদন করার পরামর্শ দেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। তাই এবার কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় হাইকোর্টে রি-ট্রায়ালের আবেদন জানাতে চলেছেন নির্যাতিতার পরিবার। গতকাল নির্যাতিতার বাবা মা মালদার আইনজীবী তড়িৎ ওঝার সঙ্গে দেখা করে কথা বললেন।
আইনজীবী তড়িৎ ওঝা দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন নির্যাতিতার বাবা ও মায়ের সঙ্গে। এদিন তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘মামলায় পরবর্তীতে আমাদের কৌশল কি হবে তা নিয়েই পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী পাঁচ তারিখ কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানি রয়েছে। আমরা রি-ট্রায়াল চাইছি। আমাদের যুক্তি, আরজি করে একাধিক দুর্নীতির ঘটনা রয়েছে। সিবিআই এবং ইডির তদন্তেও তা স্পষ্ট। আরজি করে দুর্নীতির মধ্যেই লুকিয়ে আছে অভয়ার খুনের মোটিভ। রি- ট্রায়ালের আদেশ পেলে কেউ ছাড় পাবে না।’
অন্যদিকে নির্যাতিতার পরিবারের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে , তার মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনায় একা সঞ্জয় রায় জড়িত নয়। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের একাধিক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে। ঘটনার দিন চার জন জুনিয়ার ডাক্তারও ছিল তারাও যুক্ত রয়েছে। সকলের কঠোর শাস্তির দাবিতে তাঁরাও রাজি হাইকোর্টের রি-ট্রায়ালের আবেদন করার জন্য। তারউপর আগামী বুধবার, আলিপুরের বিশেষ CBI আদালতে আরজি কর মেডিক্যালের দুর্নীতি মামলার ফের শুনানি রয়েছে। বৃহস্পতিবার হবে সেই মামলার চার্জ গঠন।