সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা যখন ভরাডুবির মধ্যে পড়েছে, তখন আবারো এক চাঞ্চল্য ছড়াল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাতিল হয়েছে প্রায় 26 হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি। আর সেই অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে এবার নিজেদের দাবি নিয়ে পথে নামল 42 হাজারের বেশি পার্শ্বশিক্ষক। তাদের মূল দাবি এখন বেতন বৃদ্ধি। আর এই দাবিকে হাতিয়ার করেই তারা আসন্ন সপ্তাহের সোমবার থেকে শুক্রবার অর্থাৎ 21শে এপ্রিল থেকে 25শে এপ্রিল পর্যন্ত টানা 4 দিন ক্লাস বয়কটের (Class Boycott) ঘোষণা দিয়েছেন। আর এই সিদ্ধান্তে রাজ্যের বহু স্কুলে পড়াশোনার স্বাভাবিক ছন্দ পতনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
পার্শ্ব শিক্ষকদের দাবি
পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্যমঞ্চের আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, “2018 সালের পর আমাদের বেতন সামান্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। আর তারপর থেকে কোন খোঁজ নেওয়া হয়নি। অথচ এখন শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা কমে যাওয়ার ফলে বাড়তি কাজের বোঝা আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা ন্যায্য সম্মান চাই, অতিরিক্ত কোন কাজ নয়।”
স্কুলে বাড়ছে কাজের চাপ এবং কমছে শিক্ষক
বর্তমানে রাজ্যের পরিস্থিতি এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে, যেখানে স্কুলগুলি শিক্ষক সংকট ভুগছে। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাতিল হয়েছে 26 হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি। আর সেখান থেকেই সংকট আরো গভীর হয়েছে। এর ফলে পার্শ্বশিক্ষকদের উপর চাপ পড়েছে কয়েকগুণ বেশি। নিয়ম বলছে, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সপ্তায় 20টি করে ক্লাস নেওয়ার কথা পার্শ্বশিক্ষকদের। আর এখন তাদের গিয়ে নবম, দশম, এমনকি একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাসেও পড়াতে হচ্ছে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
মাত্র 13 হাজার টাকায় সংসার চলে?
সুত্রের খবর, বর্তমানে প্রাথমিক স্তরের পার্শ্বশিক্ষকরা মাত্র 10 হাজার টাকা বেতন পান এবং উচ্চ প্রাথমিক স্তরের শিক্ষকরা মাত্র 13 হাজার টাকা বেতন পান। 2018 সালের পর থেকে প্রতি বছর 3% হারে বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছিল। তবে বাস্তবে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, স্কুলের দায়িত্ব বেড়ে যাচ্ছে, ক্লাস বাড়ছে, কিন্তু বেতন তো একই থেকে যাচ্ছে। তাহলে কীভাবে চলবে?
কর্মবিরতির ঘোষণা
যদিও এর আগে চলতি এপ্রিল মাসের 7, 8 ও 9 তারিখে পার্শ্বশিক্ষকরা ক্লাস বয়কট করেছিলেন। কিন্তু তাতেও কোন সাড়া মেলেনি রাজ্য সরকারের তরফে। তাই তারা আবারও কর্মবিরতির পথে হাঁটছেন। জানা যাচ্ছে, আগামী সোমবার থেকে শুক্রবার টানা চারদিন ক্লাস বয়কট হবে। মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই তাদের এই পদক্ষেপ, এমনটাই জানাচ্ছে আন্দোলনকারীরা।