প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিশ্বের সেরা ৫ টি রেলওয়ের নেটওয়ার্কের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ভারতীয় রেল (Indian Railways)। তাইতো ভারতীয় রেলকে দেশের পরিবহনের মেরুদণ্ড বলা হয়। প্রতিদিন কোটি কোটি যাত্রী এই নেটওয়ার্কের উপর নির্ভরশীল। তাই তাঁদের সুবিধার্থে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ক্রমাগত নিয়ে চলেছে ভারতীয় রেল। আর এই আবহে ফের রেলযাত্রীদের জন্য বড় সুখবর দিল এই পরিবহন ব্যবস্থা। অবশেষে দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে যাত্রীদের কাটোয়া-আহমদপুর শাখায় নতুন এক জোড়া নয়া ট্রেনের ঘোষণা করল ভারতীয় রেল।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
বর্ধমান-বীরভূমের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম!
ইতিহাসের পাতায় নজর রাখলে দেখা যাবে ১৯১৭ সালে কাটোয়া-আহমদপুর রেলপথের সূচনা হয়েছিল। রেললাইনটি ব্রডগেজ হলেও শুধুমাত্র একটি ট্রেন যাতায়াত করত। যেটি কাটোয়া থেকে সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ছাড়ে। এবং আহমদপুর থেকে ফের ১১টা ১০ মিনিটে রওনা দেয় কাটোয়ার উদ্দেশ্যে। এদিকে এই ৫৩ কিলোমিটার দূরত্বে রেলপথের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে হাজারো স্মৃতি। আসলে এই আহমদপুর এলাকা বীরভূম জেলার মধ্যে পড়ে। অন্যদিকে কাটোয়া পূর্ব বর্ধমান জেলায়। অর্থাৎ এই দুই জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল এই রেলপথ। আর এই রুটে যাতায়াতের পথেই পড়ত চৌহাট্টা, লাভপুর, কীর্ণাহার, দাসকলগ্রামর মতো স্টেশন।
স্পেশাল তকমা দেওয়া হয়েছিল ট্রেনটিকে!
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই ট্রেনে করেই নাকি কথা সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও যাতায়াত করেছেন। কিন্তু মাঝে করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন বন্ধ রাখা হয়েছিল কাটোয়া-আহমদপুর শাখার ট্রেন চলাচল। শেষমেষ বহু দাবিতে ওই ট্রেন চালু হলেও ‘স্পেশাল’ তকমা দিয়ে চালানো শুরু হয়। এমনকি ট্রেনের ভাড়াও ১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়। এরপর স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেক আবেদনের পর আরও একজোড়া নতুন মেমু স্পেশাল চালু করতে চলেছে যাত্রীরা। যদিও এলাকার লোকজনের অভিযোগ, এই রেল রুট ন্যারো থেকে ব্রড হলেও, পরিষেবায় খুব একটা বদল আসেনি। সারা দিনে মোটে ২টি ট্রেন চলে। দিনে চার বার যাতায়াত করে সেই ট্রেন।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী জানা গিয়েছে আগামীকাল অর্থাৎ ১৮ এপ্রিল থেকে এই নতুন ট্রেনটি চালানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পূর্ব রেল। এবং এই ট্রেনটি আহমদপুর থেকে কাটোয়া পর্যন্ত দিনে এক বার যাতায়াত করবে। ০৩০৩৭ কাটোয়া আহমদপুর স্পেশাল সকাল ৬ টা ৩৫ মিনিটে ছাড়বে এবং সকাল ৮ টায় আহমদপুর স্টেশনে পৌঁছবে। অন্যদিকে ০৩০৩৮ আহমদপুর কাটোয়া স্পেশাল ট্রেনটি সকাল ৮ টা ৪৫ মিনিটে ছাড়বে। যা কাটোয়া স্টেশনে সকাল ১০ টা ১০ এ পৌঁছবে। আর এই যাত্রাপথে অর্থাৎ কাটোয়া থেকে আহমদপুর এবং আহমদপুর থেকে কাটোয়া আসতে মোট ৪ টি স্টেশনে দাঁড়াবে। পাঁচন্দি, জ্ঞানদাস কাঁন্দরা, কীর্ণাহার এবং লাভপুর।
এদিকে এই নয়া মেমু ট্রেন প্রসঙ্গে আহমদপুর-কাটোয়া তারাশঙ্কর প্যাসেঞ্জার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অরুণ রায় এবং সম্পাদক আসরাফুল ইসলামরা ভারতীয় রেলের এই উদ্যোগকে বেশ প্রশংসা করেছে। তাঁরা জানিয়েছেন যে রেলমন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নতুন ট্রেনটি ১৩টি স্টেশনের মধ্যে মাত্র ৫টি স্টেশনে থামার কথা ছিল। কিন্তু তাঁদের দাবি ছিল যে শুধুমাত্র ৫ টি নয়, বাকি ৮ টিতেও যাতে ট্রেন থামে। অবশেষে সেই দাবি মেনে নিয়েছে ভারতীয় রেল।
কাটোয়া ও আহমদপুরের মধ্যে স্পেশাল এমইএমইউ ট্রেন পরিষেবা pic.twitter.com/E8YpIFKShH
— Eastern Railway (@EasternRailway) April 15, 2025
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।