শ্বেতা মিত্র, কলকাতা: বছর ঘুরলেই বাংলায় রয়েছে বিধানসভা ভোট। এরই মাঝে রাজ্য সরকারের কাছে অন্যতম বড় ইস্যু হয়ে রয়েছে ওবিসি (OBC)। সুপ্রিম কোর্ট বর্তমানে ওবিসি সংক্রান্ত তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের আবেদনের শুনানি করছে। বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং রাজশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ গত বছরের মে মাসে রাজ্যে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) জন্য চালু সংরক্ষণ ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এক বিশাল রাজনৈতিক বিতর্কের সূত্রপাত করেছিল। যাইহোক, বিধানসভা ভোটের আগে নতুন করে ওবিসি সার্ভে শুরু করতে উদ্যোগী রাজ্য।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
ভোটের আগে সার্ভে শুরু রাজ্যের
২০২৪ সালের মে মাসে কলকাতা হাইকোর্ট ২০১০ সাল থেকে ৭৭টি সম্প্রদায়কে দেওয়া ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে, যার মধ্যে বেশিরভাগই মুসলিম, এবং শ্রেণিবিন্যাস প্রক্রিয়াটিকে অবৈধ বলে অভিহিত করে।হাইকোর্টের আদেশে “এই আদালত পর্যবেক্ষণ করে জানতে পেরেছে যে ৭৭টি শ্রেণীর মুসলিমদের অনগ্রসর হিসেবে নির্বাচিত করা সমগ্র মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য অপমানজনক। উক্ত সম্প্রদায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ৭৭টি শ্রেণীকে ওবিসি হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করার এবং তাদের অন্তর্ভুক্তিকে ভোট ব্যাংক হিসেবে বিবেচনা করার ঘটনাবলীর ধারাবাহিকতা থেকে এটি স্পষ্ট।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, নতুন সার্ভেটি পশ্চিমবঙ্গ অনগ্রসর শ্রেণী কমিশন দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ বিভাগ কেবল কমিশনকে সহায়তা করছে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
নজরে ওবিসি ভোট!
এদিকে বিভিন্ন জেলায় নিযুক্ত কর্মকর্তারা সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছে জানিয়েছেন যে তাদের সার্ভে শুরু করার এবং ওবিসি সার্টিফিকেট প্রাপ্তদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পটভূমি সম্পর্কে রিপোর্টে তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একজন জেলা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “ঊর্ধ্বতন আমলাদের দ্বারা অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকের সময় এই আদেশ দেওয়া হয়েছিল।”
কেন্দ্রীয় তালিকা অনুযায়ী ৬২টি জাত এবং ১১৩টি উপ-জাতের (সাব কাস্ট) কথা জানিয়ে সমীক্ষা চালাতে বলা হয়েছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বেঞ্চমার্ক সার্ভে’। সঙ্গে দেওয়া হয়েছে সমীক্ষার জন্য নমুনা প্রশ্নের তালিকাও। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য, ‘‘তোষণ-নীতির কারণে ওবিসি-র মাধ্যমে মুসলিমদের সংরক্ষন দিয়েছিল সরকার। সব বাতিল হয়েছে। এই সরকার নির্লজ্জ!’’
কী বলছেন রাজনৈতিক নেতারা?
এছাড়াও সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মতে, ‘‘তৃণমূলের সরকার কি অন্য কোনও রাজ্যের পরিস্থিতিকে এ রাজ্যের ছবি হিসেবে দেখতে চাইছে? ধর্মের বাছ-বিচার সরিয়ে আর্থ-সামাজিক ভাবে পিছিয়ে থাকা সকলকে সুযোগ দিতেই ওবিসি সংরক্ষণ চালু হয়েছিল। এই সরকার নিয়ম না মেনে সবটা গোলমাল পাকিয়ে এখন নানা রকম কৌশল করছে।’’
আসন্ন বিধানসভা ভোটে ওবিসি ভোট বড় ফ্যাক্টর সরকারের কাছে। ফলে দ্রুত কাজ করতে উদ্যোগী সরকার বলে মত রাজনৈতিক মহলের।