সৌভিক মুখার্জী, কলকাতাঃ নতুন শিক্ষাবর্ষের জন্য কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় ভর্তির (Kendriya Vidyalaya Admission) দরজা খুলে দিয়েছে। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে। ৭ই মার্চ, শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে আবেদনপত্র পূরণ করা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট kvsangathan.nic.in -এ ভর্তি সংক্রান্ত সমস্ত যাবতীয় তথ্য ইতিমধ্যেই আপডেট করা হয়েছে। যদি আপনি আপনার সন্তানকে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে ভর্তি করতে চান, তাহলে আগে থেকেই এই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলি প্রস্তুত করে রাখুন।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে কী কী ডকুমেন্ট লাগবে?
সূত্রের খবর অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে গেলে বেশ কিছু ডকুমেন্টের প্রয়োজন হচ্ছে। KV কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত একটি সূত্র অনুযায়ী, শিশুকে ভর্তি করতে গেলে নিন্মলিখিত ডকুমেন্টগুলি জমা করতে হবে-
১) প্রথম শ্রেণীর ভর্তির জন্য সরকার স্বীকৃত সংস্থার জারি করা জন্ম সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। এটি নোটিফায়েড এরিয়া কাউন্সিল, পৌরসভা, মিউনিসিপাল কর্পোরেশন, গ্রাম পঞ্চায়েত, সামরিক কোনো হাসপাতাল বা প্রতিরক্ষা কর্মীদের সার্ভিস রেকর্ডস থেকে ইস্যু করা যেতে পারে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
২) দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণীর ভর্তির জন্য ট্রান্সফার সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক নয়। তবে এক্ষেত্রে বলে রাখি, শিক্ষার্থীর জন্মতারিখ অবশ্যই সরকারি সংস্থা কর্তৃক জারি করা ডকুমেন্টে উল্লেখ থাকতে হবে।
৩) তফসিলি জাতি (SC), তফসিলি উপজাতি (ST), অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (OBC-Non Creamy Layer), অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণি (EWS) এবং BPL ক্যাটাগরির শিশুদের জন্য সরকারি সংস্থার জারি করা কাস্ট সার্টিফিকেট অবশ্যই জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভালো, যদি শিশুর নামে কোনরকম সার্টিফিকেট না থাকে তাহলে শুরুতে বাবা-মায়ের সার্টিফিকেট গ্রহণযোগ্য হবে। তবে ভর্তি নেওয়ার তিন মাসের মধ্যে শিশুর নিজের নামে সার্টিফিকেট করতে হবে।
৪) বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের ক্ষেত্রে সিভিল সার্জন, পুনর্বাসন কেন্দ্র বা ভারত সরকারের কোন সংস্থার নির্ধারিত অথরিটি দ্বারা ইস্যু করা সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। যদি কোন শিশুর শারীরিক সমস্যা থাকে এবং প্রধান শিক্ষক তা দেখতে পান, তাহলে সার্টিফিকেট ছাড়াও ভর্তি করানো যেতে পারে।
৫) গত সাত বছরের বদলির তথ্যসহ চাকরির সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখা ভালো, সংশ্লিষ্ট অফিসের প্রধান দ্বারা স্বাক্ষরিত এবং যাচাই করা হতে হবে এই সার্টিফিকেটটি।
৬) যদি আবেদনকারীর পিতা অবসরপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা কর্মী হন, সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়া সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
৭) বাসস্থান সংক্রান্ত প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে, যা আবেদনকারীর স্থায়ী ঠিকানা নিশ্চিত করবে।
ভর্তির ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্তাবলী
কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় সংস্থা কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত বেঁধে দিয়েছে ভর্তির ক্ষেত্রে, যেগুলি জেনে রাখা অবশ্যই জরুরী। সেগুলি হল-
১) শুধুমাত্র আবেদনপত্র পূরণ করলেই ভর্তি নিশ্চিত হবে না।
২) যারা অসম্পূর্ণ আবেদনপত্র জমা দিচ্ছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলে রাখি, অসম্পূর্ণ আবেদনপত্র বাতিল করে দেওয়া হবে।
৩) ভুল তথ্য বা জাল নথির ভিত্তিতে ভর্তি করা হলে সেই ভর্তি বাতিল করা হবে এবং এর বিরুদ্ধে কোনোরকম আপিল গ্রহণযোগ্য হবে না।
৪) একজন শিশুর নামে একই বিদ্যালয়ে একাধিক আবেদন জমা পড়লে সর্বশেষ আবেদনপত্রটি বৈধ বলে গণ্য করা হবে।
৫) যদি কোন কারনে ভর্তি বাতিল হয়ে যায়, তাহলে স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের লিখিতভাবে জানিয়ে দেবে, যাতে ভবিষ্যতে কোনরকম আইনি সমস্যার সৃষ্টি না হয়।
৬) প্রথম শ্রেণীর ভর্তির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইনের মাধ্যমেই করতে হবে।
কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ভর্তি পদ্ধতি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ এবং নিয়ম অনুযায়ী পরিচালিত হয় প্রতিবার। তাই শিশুকে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় ভর্তি করতে হলে অভিভাবকদের অবশ্যই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমস্ত ডকুমেন্ট প্রস্তুত রাখতে হবে। আবারো জানিয়ে রাখি, ভুল তথ্য বা অসম্পূর্ণ আবেদন এড়িয়ে চলবেন। যদি সবকিছু সঠিকভাবে মেনে চলা হয়, তবেই আবেদনের ক্ষেত্রে কোনরকম সমস্যা হবে না।