প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: আজ থেকে ১ সপ্তাহ আগে গত বৃহস্পতিবার অনেকের কাছেই অভিশপ্ত দিন ছিল৷ কারণ এই দিনে চাকরি হারিয়েছেন রাজ্যের কমপক্ষে প্রায় ২৬ হাজার সরকারি স্কুলশিক্ষক৷ তাঁদের মধ্যে কেউ যোগ্য, কেউ হয়ত অযোগ্য৷ কিন্তু, তাঁদের মধ্যে যোগ্যদের আলাদা করতে না পারায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দিয়েছে ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল৷ ৷ যা নিয়ে রীতিমত অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে গোটা বাংলা। আর তখনই বেতন বন্ধের প্রশ্নও উঠেছে চাকরিহারাদের। যা নিয়ে বড় আপডেট দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
বেতন সংক্রান্ত কী জানলেন শিক্ষামন্ত্রী?
প্রতি মাসের ১-১০ তারিখের মধ্যে নিয়মমাফিক স্যালারি রিকুইজিশন পোর্টাল চালু করা হয়। এবারেও তার ব্যতিক্রম ছিল না। সেখানে বাতিল হাওয়া চাকরিহারাদের নাম জ্বলজ্বল করছে। কিন্তু নাম থাকলেও তাঁদের বেতন দিলে কনটেম্পট অফ কোর্ট অর্থাৎ, আদালত অবমাননা হতে পারে বলে মনে করছেন আইনি বিশেষজ্ঞেরা। তবে সেক্ষেত্রে বেতন বন্ধের ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টের পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত রাজ্য যে এখনই চাকরিহারাদের বেতন বন্ধ করছে না তা স্পষ্ট । বুধবারই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, বেতনের বিষয়ে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে। এও বলেন, “এখনও পর্যন্ত কোনও স্কুলে কোনও শিক্ষককে বাদ দেওয়া হয়নি। কোথাও বেতন বন্ধের কথা বলাও হয়নি।” সুতরাং সাময়িক স্বস্তি পেয়েছে চাকরিহারারা।
কসবা কাণ্ডে চাকরিহারাদের পাশে ব্রাত্য
এছাড়াও গতকাল কসবায় চাকরিহারাদের ডিআই অফিস অভিযানকে ঘিরে পুলিশের সঙ্গে যে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটেছিল সেই ঘটনায় রীতিমত উত্তাল হয়ে পড়েছে রাজ্য রাজনীতি। ভাইরাল হয়েছে এক শিক্ষককে পুলিশের লাথি মারার ভিডিও। যা দেখে অনেকেই রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্দশার অসহায় রূপ নিয়ে কটাক্ষ করছেন। এই আবহে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বক্তব্য, ‘ওঁরা প্রভাবিত হয়েছেন। কিন্তু ওঁরা যাই করুন না কেন, আমরা ওঁদের পাশে আছি। ওঁরা তালা ভাঙুন, আন্দোলন করুন, যাই করুন না কোনও আমরা যোগ্য চাকরিহারাদের সুরক্ষা দেব।…ওঁরা যে কোনও পন্থা নিতে পারেন, আমরা শান্তির পথে সমাধানে বদ্ধপরিকর।’ চাকরিহারাদের ‘ধৈর্য’ ধরার কথাও জানান তিনি। যদিও, পুলিশ কেন নির্মমভাবে লাঠিচার্জ করল চাকরিহারাদের ওপর সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কোনও মন্তব্য করেননি শিক্ষামন্ত্রী।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
প্রসঙ্গত, গত ৭ এপ্রিল নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চাকরিপ্রার্থীদের বলেছিলেন, “আমি বেঁচে থাকতে কাউকে চাকরিহারা হতে দেব না, শীর্ষ আদালতে সমস্যার সুরাহা না হলে রাজ্য বিকল্প ব্যবস্থা করবে।” এমনকি তিনি চাকরিহারাদের স্কুলে গিয়ে স্বেচ্ছায় পড়াতেও বলেছিলেন। এরপরেও মিরর ইমজ প্রকাশ করে যোগ্য ও অযোগ্য বাছাইয়ের দাবিতে গতকাল, বুধবার রাজ্যজুড়ে ডিআই অফিসে বিক্ষোভ দেখায় সদ্য চাকরিহারাদের একাংশ। জানা গিয়েছে আজ কসবা, বর্ধমানে শিক্ষকদের ওপর পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদে মহামিছিলের ডাক দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।