বিক্রয় ব্যানার্জী, কলকাতা: চিনকে বড় ধাক্কা দিল ভারত! আফ্রিকার দেশ গুলি থেকে খনিজ সম্পদ লুণ্ঠনের পরিকল্পনা চিনের বহু আগেকার! এবার সেই পরিকল্পনা বানচাল করতে আফ্রিকার দেশগুলিতে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে ভারত। সিএসইপি-র রিপোর্ট বলছে, প্রয়োজনীয় খনিজ সম্পদ আহরণের জন্য আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বিপুল পরিমাণ অর্থবিনিয়োগ করছে ভারত সরকার।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
সূত্রের খবর, মূলত মিশন আফ্রিকার (Mission Africa) অধীনে আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশগুলি থেকে প্রয়োজনীয় খনিজ যথা, তামা, লিথিয়াম, নিকেল এবং কোবাল্টের মতো বহুমূল্য খনিজ সম্পদগুলিতে প্রবেশাধিকার বাড়িয়ে চলেছে ভারত। যা চিনের জন্য কার্যত হুমকি স্বরূপ।
বিপুল চাহিদার কথা মাথায় রেখেই আফ্রিকা অভিযান?
বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, আগামী 2030 সালের মধ্যে ভারতের প্রয়োজনীয় খনিজ সম্পদের চাহিদা কমপক্ষে চার গুণ বৃদ্ধি পাবে। সিএসইপির গবেষণা বলছে, বর্তমানে ভারতে 5.9 মিলিয়ন টন লিথিয়াম আকরিক রয়েছে। যা আগামী কয়েক বছর পর্যন্তই চাহিদা মেটাবে। কাজে ভবিষ্যতে যাতে খনিজ আকরিকের আকাল দেখা না দেয় সেজন্য আগেভাগে দক্ষিণ আফ্রিকার খনিজ সমৃদ্ধ দেশগুলিতে অভিযান শুরু করেছে ভারত।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
শুধু তাই নয় আফ্রিকা ছাড়াও, অস্ট্রেলিয়া, লাতিন আমেরিকার মতো দেশগুলিতে যেখানে বিপুল পরিমাণে খনিজ পাওয়া যায়, সেই সব দেশের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে ভবিষ্যতের খনিজ সরবরাহ শৃঙ্খল অটুট রাখতে চাইছে ভারত। বেশ কিছু প্রতিবেদন দাবি করছে, আফ্রিকার দেশগুলিতে ভারত যে হারে খনিজ অভিযান চালাচ্ছে তাতে আগামী বছরগুলিতে ভারতের খনিজ সম্পদ সম্পর্কিত কোনও রকম সমস্যা হবে না।
ভারতের মিশন আফ্রিকা চিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে?
বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে দাবি করছে, ভারত সরকার যেভাবে আফ্রিকার দেশগুলির সাথে পারস্পারিক সম্পর্ক উন্নত করছে, তাতে যথেষ্ট বিচলিত চিন। কেননা, চিন প্রথম থেকেই আফ্রিকার দেশগুলিতে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে চেয়েছে, তবে আফ্রিকানরা চিনের ঋণ নীতিতে একেবারেই বিশ্বাসী নয়। ফলত, এই দুই মতবিরোধের মাঝেই সরু লাইন করে ফেলেছে ভারত।
বলে রাখি, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঘোষিত জাতীয় সমালোচনামূলক খনিজ মিশন (এনসিএমএম) প্রতিবেদনের অংশ হিসেবে ভারতের মিশন আফ্রিকা খনিজ সম্পদ আহরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশগুলির সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে ভারত। আর সেই সূত্র ধরেই, ক্রমশ আফ্রিকার খনিজ সমৃদ্ধ দেশগুলির সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি করেছে কেন্দ্র।
বেশ কিছু প্রতিবেদন দাবি করছে, বর্তমানে আফ্রিকার দেশগুলির শীর্ষ 5 বিনিয়োগকারী দেশের মধ্যে অন্যতম ভারত। বলা বাহুল্য, এই 5 দেশ আফ্রিকার খনিজ সম্পদ আহরণের জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করে থাকে। আফ্রিকার সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করে এক বিরাট বাণিজ্যিক চেইন গড়ে তুলেছে ভারত সরকার। উপরি পাওনা হিসেবে, আফ্রিকার দেশগুলোতে বসবাসকারি 30 লক্ষ ভারতীয় বংশোদ্ভুতদের কারণে অতিরিক্ত সুবিধা পাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। যার কারণে ভারতের মিশন আফ্রিকা চিনের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছে।
অবশ্যই পড়ুন: চিনের আগে ভারত আসতে চেয়েছিলেন ইউনূস, পাত্তা দেয়নি দিল্লি! অভিযোগ বাংলাদেশের
উল্লেখ্য, গোটা বিশ্বে আবিষ্কৃত উল্লেখযোগ্য খনিজ সম্পদের মধ্যে 30 শতাংশই রয়েছে আফ্রিকার দেশ গুলিতে। ফলত, ভারতের এই নতুন পদক্ষেপের কারণে আফ্রিকার দেশগুলিও বিরল থেকে বিরলতর খনিজ সম্পদ আহরণ করতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আফ্রিকার দেশগুলির সাথে ভারতের সম্পর্ক আগামী দিনে আরও সুগার হলে, ভারত তো বাণিজ্যিক সুবিধা পাবেই, সেই সাথে বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে চিন।