দলিলের জন্যে আর অফিসে অফিসে দৌড়াতে হবে না, অনলাইনেই হবে সব কাজ

রাজ্যের মানুষের জন্য জমি-বাড়ি সংক্রান্ত কাজ সহজ করতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। জমি এবং বাড়ির দলিল সংগ্রহ করতে আর অফিসে অফিসে ঘুরতে হবে না। অনলাইনের মাধ্যমেই মিলবে এখন থেকে সার্টিফায়েড কপি।

জমি সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতা ও দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে উঠে আসছিল। নবান্নে জমা পড়ছিল অসংখ্য অভিযোগ। সেখানে মানুষ জানাচ্ছিলেন যে, দলিল পেতে দিতে হচ্ছে ঘুষ। এমনকি দিনের পর দিন অফিসে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে। তাই এবার অনলাইন ‘ল্যান্ড এন্ড হাউস রেজিস্ট্রেশন’ ব্যবস্থা চালু করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

কীভাবে কাজ করবে এই নতুন অনলাইন পোর্টাল?

আগে দলিল সংগ্রহের জন্য রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে আবেদন জমা করতে হতো। তবে বিভিন্ন দালাল ও ঘুষের ফাঁদে পড়তো সাধারণ মানুষ। তবে এখন থেকে দলিলের সার্টিফায়েড কপি শুধুমাত্র অনলাইনেই পাওয়া যাবে। মূল হার্ড কপি সংগ্রহ করতে গেলে সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রি অফিস থেকে আইজিআর রশিদ দেখিয়ে সংগ্রহ করতে হবে। 

READ MORE:  বেকার যুবক-যুবতীদের জন্যে বড় উদ্যোগ রাজ্যের, ডেকে ডেকে চাকরি দিচ্ছে সবাইকে

বাংলা সহায়তা কেন্দ্রেও মিলবে সুবিধা

অনেকেই অনলাইনে পারদর্শী নয়। তাদের জন্য থাকছে বিকল্প ব্যবস্থা। রাজ্যের বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে গিয়েও এখন থেকে এই পরিষেবা নেওয়া যাবে। তবে অনলাইনে দলিলের কপি পেতে লাগবে নামমাত্র খরচ। 

  • কোর্ট ফি হিসেবে লাগবে ১০ টাকা।
  • নন জুডিশিয়াল স্টাম্পের জন্য লাগবে ১০ টাকা। 
  • সার্চ ফির জন্য লাগবে ২ টাকা।
  • ইন্সপেকশন ফির জন্য লাগবে ২ টাকা।
  • প্রতি পাতা কপির জন্য লাগবে ৭.৫০ টাকা। 
READ MORE:  RRB Min & Iso Categories Recruitment 2025: ভারতীয় রেলে ১০৩৬টি শূন্যপদে পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি | Indian Railways Recruitment

১৯৮৫ থেকে সমস্ত দলিল অনলাইনে

এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য রাজ্য সরকার এবার দুটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এতদিন ২০০৭ সালের পর থেকে সমস্ত দলিলের সার্টিফাইড কপি অনলাইনে পাওয়া যেত। কিন্তু এবার ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত সমস্ত দলিলেও ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। 

ডিরেক্টর অফ রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড স্টাম্প ডিউটির তত্ত্বাবধানে থাকা প্রায় ৩ কোটি দলিল অনলাইনের মাধ্যমে এখন থেকে সংরক্ষণ করা হবে। অর্থাৎ, যারা পুরনো দলিলের কপি পেতে সমস্যায় পড়তেন তাদের জন্য এবার সমাধান মিলবে অনলাইনে। 

রাজ্যের মানুষ কীভাবে উপকৃত হবে? 

নতুন এই অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে জমি-বাড়ির ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রচুর সুবিধা হবে। যেমন- 

  • ঘুষ ও দালালচক্রের নিষ্পত্তি ঘটবে।
  • অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই দলিল পাওয়া যাবে। 
  • অফিসে অফিসে ঘোরার ভোগান্তি আর হবে না। 
  • সমস্ত তথ্য থাকবে ডিজিটালভাবে সংরক্ষিত। 
READ MORE:  একবার রিচার্জ করুন, সারা বছর আনলিমিটেড 5G ডেটা ব্যবহার করুন, Jio নিয়ে এল নতুন চমক

এতদিন জমির পর্চা, বিদ্যুৎ সংযোগ, পৌরসভার কর বা মিউটেশনের জন্য দলিলের প্রয়োজন হতো। আর সেটা সংগ্রহ করতেই মানুষ দুর্নীতির শিকার হত। কিন্তু এবার থেকে সব কাজ হবে এক ক্লিকে অনলাইনের মাধ্যমে। 

পশ্চিমবঙ্গ সরকার ধীরে ধীরে যেভাবে ডিজিটালাইজেশনের দিকে এগোচ্ছে তাতে মানুষের জীবনযাত্রার মান আরো সহজ হয়ে উঠবে। আর এই নতুন ‘ল্যান্ড এন্ড হাউস রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা দুর্নীতির অবসান ঘটিয়ে এবার থেকে প্রশাসনের দৃষ্টি স্থাপন করবে।