প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাত পেরোলেই আগামীকাল দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে পুণ্যার্থীদের। কারণ অক্ষয় তৃতীয়ার শুভক্ষণে উদ্বোধন হতে চলেছে দিঘার জগন্নাথ মন্দির (Jagannath In Digha)। গত শুক্রবার থেকেই সেখানে বিভিন্ন রকমের অনুষ্ঠান আয়োজিত হচ্ছে। আজও হয়েছিল বিশেষ যজ্ঞের আয়োজন। আগামীকালও একাধিক যজ্ঞ রয়েছে। সম্পূর্ণটা মুখ্যমন্ত্রী নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তদারকী করছে। কিন্তু দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের আগেই এবার জোর বিতর্কের মুখে পড়ল রাজ্য সরকার। দেবদর্শন ব্যবস্থা নিয়ে উঠে এল একাধিক বিতর্ক।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
দেব দর্শন নিয়ে বিতর্ক
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই জানিয়ে এসেছিল যে দিঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরি হবে সম্পূর্ণ পুরীর আদলে। সেই অনুযায়ী তাই নির্মাণ করা হয়েছে। এদিকে পুরীতে অহিন্দুদের দেব দর্শন নিয়ে একাধিক জটিলতা তৈরি হয়েছিল। যার ফলে পুরীর মন্দিরে হিন্দু ব্যতীত অন্য ধর্মের লোকজনের ঢোকা নিয়ে বারবার জটিলতা তৈরি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত মন্দির কর্তৃপক্ষের দীর্ঘ বৈঠকের পরে শেষে যাঁরা হিন্দু নন, তাঁদের জগন্নাথ দর্শনের ব্যবস্থা করতে মন্দিরের বাইরে তৈরি করা হয়েছিল পতিতপাবন মূর্তি। এবার সেই পথেই হাঁটল রাজ্য সরকার। দিঘাতেও অহিন্দুদের দর্শনের জন্য পতিতপাবন কক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে তাঁরা মূর্তি দর্শন করতে পারবে।
কী বলছেন পুরীর প্রধান পুরোহিত?
ইতিমধ্যেই দেব দর্শন নিয়ে পুরীর প্রধান পুরোহিত রাজেশ দয়িতাপতির এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, “জগন্নাথদেব সকলের প্রভু। তবে রীতি অনুসারে তাঁর কাছে হিন্দু ছাড়া কেউ যেতে পারেন না। তবু কেউ যদি তাঁর দর্শন পেতে চান, তা হলে প্রভু বাধাও দিতে পারেন না। তাই দিঘায় পতিতপাবন কক্ষ করিয়েছি।” একই সুরে সুর মিলিয়েছে দিঘার জগন্নাথ ধাম পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ইসকনের সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস। তিনি বলেন, “পতিতপাবন কক্ষ এবং মূর্তি করা হয়েছে। সেখানে দাঁড়িয়ে প্রভুর দর্শন পাবেন অহিন্দুরাও।” কিন্তু এবার সেই দেব দর্শন নিয়ে ধর্ম বিদ্বেষের বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
কাঁথির প্রভাত কুমার কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক অমলেন্দু বিকাশ জানা জানিয়েছেন, “অযোধ্যায় রামমন্দির বা জামা মসজিদ কিন্তু তৈরি হয়েছে সংশ্লিষ্ট ধর্মের লোকজনের আর্থিক সহযোগিতায়। কিন্তু দিঘায় এই মন্দির পুরোপুরি সরকারি অর্থে তৈরি হয়েছে। খরচ হয়েছে প্রায় আড়াইশো কোটি টাকা। সেক্ষেত্রে সকল ধর্মের লোকের থেকে অর্থ নেওয়া হয়েছে। তাই সেখানে পতিতপাবনের মতো আয়োজন করা একদমই উচিত হয়নি। একদমই নীতিগত ভাবেও ঠিক নয়।”
কটাক্ষ ছুঁড়ল বিজেপি
অন্যদিকে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি কাঁথির বিজেপি সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “সরকার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়তে পারে না। তাই সরকারি ভাবে জগন্নাথ ধামকে সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র বলা হয়।” কিন্তু পাল্টা জবাব দেয় তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষ। তিনি বলেন, “বিজেপি অপপ্রচার করে মানুষকে আটকাতে পারবে না। আগামীকাল বাংলা ইতিহাস গড়বে।”