সৌভিক মুখার্জী, কলকাতাঃ ফের পাকিস্তানের হাওয়া গরম। ভারতের অন্যতম কুখ্যাত শত্রু এবং লস্কর-ই-তৈবা (LeT)-এর সন্ত্রাসী আবু কাতাল (Abu Qatal) সন্ত্রাসের দেশে খুন হয়েছে। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের ঝেলামের দিনা এলাকায় অজ্ঞাত আততায়ীদের গুলিতে তিনি প্রাণ হারিয়েছে। সূত্র বলছে, ২৬/১১ মুম্বাই হামলার মূল চক্রে জড়িত হাফিজ সৈয়দের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিল আবু কাতাল। তাকে লস্কর-ই-তৈবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে ধরা হয়। এমনকি জন্মু ও কাশ্মীরের একাধিক হামলা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তার নাম জড়িত ছিল।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
জন্মু ও কাশ্মীরের ভয়াবহ হামলার মাস্টারমাইন্ড
বেশ কিছু সূত্র দাবি করছে, ২০১৭ সালের ৯ই জুন জন্মু ও কাশ্মীরে রিয়াসি বিস্ফোরণের পিছনে মূল মাথা ছিল আবু কাতালের। এছাড়া ২০২৩ সালে তীর্থ যাত্রীদের বাসেও হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে কার্যত ১০ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি বহুদিন ধরেই আবু কাতালকে নজরে রাখছিল। শুধু তাই নয়, তার বিরুদ্ধে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA) চার্জশিটও দাখিল করেছিল।
NIA-এর চার্জশিটে ছিল তার নাম
২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে রাজৌরি জেলার ধংরি গ্রামে সন্ত্রাসী হামলায় নিরীহ সাধারণ মানুষদের টার্গেট করা হয়। ঠিক তার পরের দিন সেখানে একটি IED বিস্ফোরণ ঘটে, যাতে সাত-সাত জনের মৃত্যু হয়। জানলে চমকে উঠবেন, তার মধ্যে দুইজন শিশুও ছিল। এই ঘটনার পর NIA ৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছিল। সেখানে তিনজন লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গির নাম ছিল। তারা হলেন সৈফুল্লাহ ওরফে সাজিদ জাট, মোহাম্মদ কাসিম এবং আবু কাতাল ওরফে কাতাল সিন্ধি।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
হাফিজ সৈয়দের মৃত্যু নিয়ে জল্পনা
আবু কাতালের মৃত্যুর পাশাপাশি ২৬/১১ হামলার মূল মাথা হাফিজ সৈয়দের মৃত্যুর খবরও চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই দাবি করছে, ঝেলামের দিনা এলাকায় যখন আবু কাতাল গাড়িতে করে যাচ্ছিল, তখনই বাইকে এসে আততায়ীরা তার উপর গুলি চালায়। এমনকি এলোপাথারি গুলি চালানো হয়। এই হামলায় আবু কাতাল ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। কিন্তু হাফিজ সৈয়দ গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তাররা তাকে মৃত বলে দাবি করে।
সন্ত্রাস দমনে ভারতের সাফল্য
ভারত বহুদিন ধরে এই লস্কর-ই-তৈবার মত জঙ্গি সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছিল। আবু কাতালের মৃত্যু নিঃসন্দেহে সন্ত্রাস দমনের ক্ষেত্রে ভারতের এক বড়সড় সাফল্য। যদিও পাকিস্তান সরকার এখনো এই বিষয়ে মুখ খোলেনি। আবু কাতাল এবং হাফিজ সৈয়দের মৃত্যু নিয়ে এখনো সমাজমাধ্যমে ধোঁয়াশা থাকলেও, এটি যে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের বড় সাফল্য তা বলা যায়।