প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত ৩ বছরে শিক্ষায় দুর্নীতি নিয়ে একাধিক তদন্ত হয়েই চলেছে। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। প্রাক্তন মন্ত্রী থেকে শুরু করে তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক, নেতা গ্রেফতার হয়েছেন। শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে বিরোধীরা। যার মধ্যে এসএসসি মামলা অন্যতম ছিল। গত বছরেই কলকাতা হাইকোর্ট ২০২৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল। কিন্তু সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট CBI তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১ বছর শুনানি চলার পর গত বৃহস্পতিবার, সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায়কে বহাল রেখে ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে দেয়। আর এই পরিস্থিতিতে ফের বাম আমলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠল।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
ঘটনাটি কী?
দমদমের এক বাসিন্দা বাম আমলে একটি ক্ষেত্রে নিয়োগ–দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেছেন কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। সেখানে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলার সময় বাম আমলে ২০০৬ সালের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি প্রসঙ্গ তুলে ধরেছিল। ২০০৬ সালের নিয়ম অনুযায়ী উচ্চমাধ্যমিক পাশ ব্যক্তিরা এই কাজের যোগ্য বলে বিবেচিত হতেন। কিন্তু কেউ যদি কোনো বিষয়ে স্নাতকতা অর্জন করেন বা তার থেকে বেশি শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকে, তাঁরা এই কাজের জন্য যোগ্য নন বলে স্থির করেছিল সরকার। কিন্তু মামলাকারীর দাবি, তাঁর স্ত্রী স্নাতকোত্তর স্তরের ডিগ্রি নিয়েও এই চাকরির জন্যে আবেদন করেছিলেন।
বাম আমলেও নিয়োগ দুর্নীতি!
এমনকি মামলাকারী এদিন আরও দাবি করেন যে তাঁর স্ত্রী এবং আরও কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী প্রথমে সিপিএমের এক শীর্ষ নেতার দ্বারস্থ হন। তিনি তাঁদের আরএসপির উত্তরবঙ্গের এক মন্ত্রীর কাছে পাঠান। এবং শেষে এই দুই নেতার সাহায্যে তাঁরা চাকরি পান। তাঁর স্ত্রী বর্তমানে বারাসতে কর্মরত। এই বিষয়ে তিনি প্রথমে ২০১৮, ২০২২ এবং ২০২৫ সালে পুলিশ–সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। শেষে কোনো উপায় না পেয়ে তাই এ বার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন তিনি। এদিন আদালতের কাছে তিনি অনুরোধ করেছেন অবিলম্বে যেন এই ঘটনার বিরুদ্ধে FIR রুজু হয় এবং সিআইডিকে দিয়ে তদন্ত করানো হয়।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
প্রসঙ্গত, এর আগে বাম আমলে ভুয়ো এক্সচেঞ্জ কার্ড দেখিয়ে প্রাথমিকে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গিয়েছে ভুয়ো এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ কার্ড দেখিয়ে ২০০৯ সালে প্রাথমিকে চাকরি পান কয়েক হাজার পরীক্ষার্থী। ইতিমধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় ভুয়ো এক্সচেঞ্জ কার্ড ব্যবহার করে চাকরি পাওয়ার অভিযোগে ২৬ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয়ে গিয়েছে যে মামলার জল গড়িয়েছিল হাইকোর্টে। আর তার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার উঠে এল বাম আমলের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগের দুর্নীতি।