প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে ইতিমধ্যেই চাকরি বাতিল হয়েছে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর। রাতারাতি চাকরি চলে যাওয়ায় রীতিমত বেকায়দায় পড়ে গিয়েছেন তাঁরা। গত বছর এপ্রিল মাসে এসএসসি-র নিয়োগ দুর্নীতি (SSC Case) মামলায় ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ সব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশের সমস্ত নিয়োগ, অর্থাৎ ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এবার দীর্ঘ ১ বছরের শুনানির পর সুপ্রিম কোর্ট একই রায় বহাল রাখল। তবে এবার প্রধান বিচারপতির রায় পুনর্বিবেচনার জন্য সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
চাকরি বাতিলের কুপ্রভাব শিক্ষা ব্যবস্থায়
গত এক বছর ধরে একাধিক শুনানি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্য’ বাছাই করার কথা বলা হয়েছিল আদালতের তরফে থেকে। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। ফলে হাই কোর্টের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করেনি প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। কিন্তু হঠাৎ করে এইভাবে রাজ্যের এত সংখ্যক শিক্ষক শিক্ষিকার চাকরি চলে যাওয়ায় নড়বড়ে হয়ে উঠেছে শিক্ষা ব্যবস্থা। রায় বেরোনোর পর থেকেই বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা কমে এসেছে। এমনকি মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক খাতা দেখার উপরেও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। চারিদিকে চাকরি ফেরৎ পাওয়ার বিক্ষোভ শুরু হয়েছে চাকরি হারাদের। যদিও গতকাল নেতাজি সুভাষ ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের পাশে সরকার রয়েছে। ফের আইনি মামলায় পথে হাঁটার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য
আর সেই প্রতিশ্রুতির ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্যের নির্বাচিত আইনজীবীরা। এদিন সুপ্রিম কোর্টের ২০১৬ এর স্কুল সার্ভিস কমিশনের চাকরি বাতিলের রায় সংশোধনের আবেদন জানিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হল রাজ্য প্রশাসন। রাজ্য সরকারের আইনজীবী প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে প্রশাসনিক অসুবিধার কথা জানিয়ে রায় কার্যকর করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে আগামীকালই শুনানির আবেদন জানান। আবেদনে সাড়া দেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। তিনি গোটা বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দেন। এবং রাজ্যের আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, “বিষয়টি আমি দেখব।”
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
এদিকে গোটা ঘটনায় রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন বিরোধী নেতারা। রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘‘তৃণমূলের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির কারণে বাংলার স্কুলশিক্ষা একেবারে ধ্বংস হতে বসেছে। রাজ্য সরকারের কারণেই এত ছেলেমেয়েকে এই দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে পড়তে হল।’’ অন্যদিকে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানিয়েছেন, “সরকারের অপদার্থতার জন্যই এই ঘটনা ঘটল। অযোগ্যদের পাশাপাশি যোগ্যদেরও বাঁকা চোখে দেখা হচ্ছে। এই পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী।”
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।