প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করা নিয়ে এর আগে বহুবার রাজ্য সরকারকে নানা কুকথা শুনতে হয়েছিল আদালতে। রীতিমত রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। কিন্তু এরপরেও নির্দেশ অমান্যের অভিযোগ কম ছিল না। এই আবহে ফের আদালতে মুখ পুড়ল রাজ্যের। আবারও প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা। হাইকোর্ট নির্দেশ (Bank Loan Recovery Case) দেওয়ার পরও না কোনও পদক্ষেপ না করায় এবার বড় ঝটকা দিল আদালত।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
ঘটনাটি কী?
আসলে মামলাটি রানিগঞ্জে এক ব্যাঙ্কের অভিযোগের ভিত্তিতে করা হয়েছিল। সেই মামলায় ব্যাঙ্কের অভিযোগ ছিল যে, এক ব্যক্তি লোন নিয়ে একটি জেসিবি মেশিন কিনতে চেয়েছিলেন, কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে লোনের টাকা পরিশোধ না করায়, ব্যাঙ্ক সেই মেশিন বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারে যে, আদতে ওই ব্যক্তি কোনও মেশিন কেনেনি। শেষপর্যন্ত ব্যাঙ্ক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। আর সেই সময় আদালত এই বিষয়ে প্রথমে রানিগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দেয় যে পুলিশ যেন এই ঘটনায় পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু সেই নির্দেশ এখনও কার্যকর করেনি রানিগঞ্জ থানার পুলিশ। যা নিয়ে এবার তীব্র ভর্ৎসনা করলেন হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
ক্ষুব্ধ বিচারপতি
গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার এই মামলা হাইকোর্টে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে ওঠে। সেখানে রানিগঞ্জ থানার পুলিশের কর্মকাণ্ড দেখে রীতিমত ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিচারপতি। তাই কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করলেন বিচারপতি ঘোষ। আদালত এদিন তিনি জানতে চায়, “জেসিবি কোথায়? কেন অভিযুক্তকে পাওয়া যাচ্ছে না? কে সেই প্রভাবশালী? কত বড় শক্তিমান তিনি?” এরপর পুলিশকে ভর্ৎসনা করে বিচারপতি বলেন, “ভুলে যাচ্ছেন এটা হাইকোর্টের অর্ডার। এবার সেন্ট্রাল এজেন্সিকে দায়িত্ব দেব। ভুলে যাবেন না, তদন্তকারী অফিসারের কিন্তু নিউ টাউন থানার আইসি-র মতো অবস্থা হবে।”
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
বেঁধে দিলেন সময়সীমা
এর আগে এমন বেশ কয়েকটি মামলায় দেখা গিয়েছিল যে রাজ্য সরকার হাইকোর্টের নির্দেশকে ঠিকভাবে পালন করছে না। যা নিয়ে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। এবার সেই প্রসঙ্গ উঠে এল বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এর এজলাসে। পুলিশ ও রাজ্যের ভূমিকায় বিরক্তি প্রকাশ করে বিচারপতি ঘোষ বলেন, “রাজ্য যদি মনে করে হাইকোর্টের নির্দেশ মানবে না, তাহলে কোর্ট জানে কী করে নির্দেশ পালন করাতে হয়। হয় ডিভিশন বেঞ্চে গিয়ে এই অর্ডার খারিজ করান, আর না হলে নির্দেশ কার্যকর করুন।” এছাড়াও তিনি আরো বলেন, “ আপনারা যদি কোর্টের অর্ডার না মানেন, তাহলে কোর্ট আপনাদের সমস্যা দেখবে না।” এই মামলার ক্ষেত্রে রানিগঞ্জ থানার পুলিশকে আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। এবং এটাই শেষ সুযোগ বলে উল্লেখ করেছেন বিচারপতি।