মাস্কের স্টারলিংক কি জিও-এয়ারটেলকে টেক্কা দিতে পারবে? কবে আসছে এই পরিষেবা?

ভারতের টেলিকম বাজারে আসতে চলেছে আবার নতুন বিপ্লব। রিলায়েন্স জিও এবং এয়ারটেল এবার হাত মিলিয়েছে ইলন মাস্কের স্পেসএক্স সংস্থার স্টারলিংকের (Starlink) সাথে। এই চুক্তির মাধ্যমে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা আরো সহজলভ্য হতে পারে ভারতে। বিশেষ করে ভারতের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে।

তবে এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন হল, ভারত সরকার আদৌ কি অনুমোদন দেবে? কারণ অনুমোদন পেলেই কেবলমাত্র এই পরিষেবা শুরু করা সম্ভব। যদি অনুমোদন দেয়, তাহলে ভারতের টেলিকম বাজারে আসতে পারে বড়সড় পরিবর্তন, যা প্রচলিত ব্রডব্যান্ড পরিষেবার থেকেও আরো উচ্চগতির ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করবে।

স্টারলিংক কী এবং এর বিশেষত্ব কি?

স্টারলিংক হল লো আর্থ অরবিট (LEO) স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা, যা সাধারণ স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের তুলনায় অনেক বেশি গতিসম্পন্ন এবং কম ল্যাটেন্সিযুক্ত পরিষেবা দেয়। স্টারলিংকে স্যাটেলাইটগুলি ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৩৪০ কিলোমিটার থেকে ১২০০ কিলোমিটার উচ্চতায় থাকে, যা প্রচলিত জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটগুলির তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর।

READ MORE:  ১লা এপ্রিল থেকে বন্ধ হয়ে যাবে UPI পরিষেবা, লেনদেন চালাতে এখনই এই কাজটি করুন

সাধারণ স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের তুলনাই স্টারলিংক অনেক দ্রুত গতিতে সংযোগ সরবরাহ করে, বিশেষভাবে দূরবর্তী অঞ্চলগুলিতে যেখানে ফাইবার অপটিক এখনো পৌঁছায়নি। ভারতের মতো বিশাল দেশে যেখানে অনেক জায়গায় এখনও ইন্টারনেটের সংযোগ দুর্বল, সেই সমস্ত জায়গায় স্টারলিংক দারুণ পরিষেবা দেবে। 

স্টারলিংক বনাম জিও ও এয়ারটেলের খরচের তুলনা

স্টারলিংক

স্টারলিংক-এ ৫০ থেকে ২০০ এমবিপিএস পর্যন্ত গতি পাওয়া যাবে। এটির এককালীন হার্ডওয়্যার খরচ পড়বে ৫৯৯ ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় ৫২,২৪২/- টাকা। মাসিক সাবক্রিকশন প্রায় ১২০ ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় ১০,৪৬৯/- টাকা। অর্থাৎ, বার্ষিক মোট খরচ হবে ২,১৫,৬০০/- টাকা।

READ MORE:  ESIC Kolkata Recruitment 2025: কোনও পরীক্ষা ছাড়াই চাকরি, ESIC কলকাতায় প্রচুর শূন্যপদে নিয়োগ | Job In West Bengal

এয়ারটেল

এয়ারটেলে সাধারণত ১০০ থেকে ২০০ এমবিপিএস গতি পাওয়া যায়। এখানে বার্ষিক খরচ হয় ১২,৩১৪/- টাকা থেকে ১৫,১৪৬/- টাকা পর্যন্ত। 

রিলায়েন্স জিও

জিওতে ১০০ থেকে ২০০ এমবিপিএস গতি পাওয়া যায়। যেখানে বার্ষিক খরচ দাঁড়ায় ১০,৮৯৮/- টাকা থেকে ১৫,১৪৪/- টাকা পর্যন্ত। 

এই বিশাল মূল্যের ফারাক দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে, স্টারলিংকের পরিষেবা শহরাঞ্চলে তেমন একটা জনপ্রিয় হবে না। বরং, শুধুমাত্র সেই সমস্ত জায়গায় কাজে লাগবে, যেখানে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা নেই। 

READ MORE:  সস্তায় মুরগির মাংস কিনছেন? হতে পারে ভয়ংকর বিপদ! মাংস খেলেই এই রোগ ছড়াচ্ছে

স্টারলিংকের ভবিষ্যৎ

ভারত সরকার ইতিমধ্যেই OneWeb ও BharatNet-এর মতো দেশীয় স্যাটেলাইট ইন্টারনেট প্রকল্পে কাজ চালাচ্ছে। তাই সরকার যদি দেশীয় পরিষেবাগুলিকে আগে অগ্রাধিকার দেয়, তাহলে স্টারলিংকের অনুমোদন পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

তবে যদি স্টারলিংক সরকারের অনুমোদন পায় এবং কম মূল্যে পরিষেবা প্রদান করতে পারে, তাহলে ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করবে।

Scroll to Top