প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: অপেক্ষার অবশেষে অবসান হতে চলেছে। আগামী ৩০ এপ্রিল মহা সাড়ম্বরে দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের (Digha Jagannath Temple) উদ্বোধন হতে চলেছে। তার আগে সামনে এল মন্দিরের কিছু ছবি। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে দিঘায় তৈরি করা হয়েছে এই মন্দির। আর অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘার জগন্নাথধাম উদ্বোধনের কর্মসূচিকে রাজ্য তো বটেই, জাতীয় এমনকি, আন্তর্জাতিক স্তরেও ‘মেগা ইভেন্ট’-এর রূপ দিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক দিঘার এই মন্দিরের গঠন সম্পর্কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
রয়েছে ১৮ মুখী অরুণ স্তম্ভ!
পুরীর মন্দিরের আদলে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের গঠনশৈলী থেকে পুজো এবং ভোগ নিবেদন সবকিছুই একরকম হবে। এবং পুরীর মতোই দিঘার জগন্নাথ মন্দির কলিঙ্গ স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন হতে চলেছে। জানা গিয়েছে পুরীর মতো দিঘার মূল মন্দিরে প্রবেশের জন্য রয়েছে চারটি দ্বার রয়েছে। সিংহদ্বারে কালো রঙের ৩৪ ফুট লম্বা ১৮ মুখী অরুণ স্তম্ভ রয়েছে। উত্তরে রয়েছে হস্তিদ্বার এবং দক্ষিণে রয়েছে অশ্বদ্বার। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের সিংহদ্বার বা মন্দিরের প্রবেশদ্বারের সামনে রয়েছে কালো রঙের অরুণ স্তম্ভ। আর এই সিংহ-দ্বার দিয়ে ঢুকলেই দেখা যাবে জগন্নাথের বিগ্রহ।
রান্নার জন্য থাকবে বিকল্প জলের ব্যবস্থা
জানা গিয়েছে এই মন্দিরে রয়েছে তিনটি দীপ স্তম্ভ। আর এই স্তম্ভের মাথায় রয়েছে অরুণা মূর্তি। অরুণ স্তম্ভের সামনের সিংহদ্বারে ঢুকলেই পুরীর মতোই সোজাসুজি জগন্নাথের মূর্তি দেখতে পাওয়া যাবে। এবং ১৬টি স্তম্ভের উপর তৈরি নাটমন্দির। আর নাটমন্দিরের চারটি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে জগমোহন। এরপর গর্ভগৃহ বা মূল মন্দিরের সিংহাসনে নিমকাঠের তৈরি জগন্নাথদেব, বলভদ্রদেব ও সুভদ্রা দেবীর কাঠামো রয়েছে। এছাড়াও ভোগমণ্ডপ ও নাটমন্দিরের মাঝে গরুড় স্তম্ভ। পুরীর মন্দিরের মতো দিঘার জগন্নাথ মন্দিরেও থাকছে লক্ষ্মী মন্দির, জগন্নাথের ভোগ রান্নার জন্য আলাদা ভোগশালা। এবং রান্নার জন্য বিকল্প জলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
রাজস্থান থেকে এসেছে ৮০০ কারিগর
এছাড়াও মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে নাটমন্দিরের দেওয়ালে কালো পাথরের তৈরি হয়েছে দশাবতার। জগন্নাথের ভোগরান্নার জন্য আলাদা করা হয়েছে ভোগশালা। জগন্নাথদেবের সেবায় থাকবে ৫৬ ভোগের আয়োজন। সুক্কা ও পাক্কা- দুই ধরনের ভোগ অর্পণ করা হবে। তবে এখানে খাজার বদলে থাকবে প্যাঁড়া আর গজা। এছাড়াও নাটমন্দিরের দেওয়ালে রয়েছে কালো পাথরে তৈরি ছোট ছোট দশাবতার মূর্তি। জানা গিয়েছে এই মন্দির এবং অযোধ্যার রামমন্দির দুটোই রাজস্থানের গোলাপি বেলেপাথর দিয়ে তৈরি। অন্তত ৮০০ কারিগর দিঘায় এসেছ মন্দির নির্মাণের কাজে। পুরীর মতো প্রতিদিন মন্দিরের চূড়ায় ধ্বজা পরিবর্তন করা হবে নিয়ম মেনে।
আজ সকাল থেকেই শুরু হয়েছে পবিত্র হোমযজ্ঞ। পুরীর মন্দিরের রাজেশ দৈতাপতির নেতৃত্বে চারদিকে চারটি হোমকুণ্ড এবং মাঝখানে মহাকুণ্ডে জ্বলছে হোমাগ্নি। আজ এই যজ্ঞের মাধ্যমে গর্ভগৃহে প্রদীপ জ্বালিয়ে দেবতাদের আহ্বান করা হয়েছে। পাশাপাশি ২৫ জন মহিলা কলম হাতে গর্ভগৃহ প্রদক্ষিণ করেছেন। আগামীকাল মহাযজ্ঞের আয়োজন হবে এবং তার আগে পর্যন্ত প্রতিদিন চলবে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান। আগামী ৩০ এপ্রিল মন্দিরের দ্বারোদঘাটন এবং দেবতাদের প্রাণপ্রতিষ্ঠা সম্পন্ন হবে।