প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: স্বাস্থ্যব্যবস্থায় রোগীদের শারীরিক গুণমান নিয়ন্ত্রণ এবং ওষুধের নিরাপত্তা বজায় রাখা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ মানুষের জীবন-যাপনের ক্ষেত্রে ওষুধের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই ওষুধের সঠিক গুণমান নিশ্চিত করতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি ক্রমেই পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে যাতে জনগণের স্বাস্থ্যের ক্ষতি না হয়।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
৯৩ টি ওষুধ কেন্দ্রের পরীক্ষায় ডাহা ফেল করেছে !
সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন বা CDSCO রিপোর্ট। যেখানে উঠে এসেছে এক বিস্ফোরক তথ্য। জানা গিয়েছে সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোল বেশ কয়েকটি ওষুধের ওপর পরীক্ষা চালিয়েছিল। আর সেই রিপোর্টে দেখা গেল দেশের মধ্যে ৯৩ টি ওষুধ পরীক্ষায় ডাহা ফেল করেছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই ডাহা ফেলের তালিকায় রয়েছে শিলিগুড়ির বেসরকারি সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের ১৬টি ব্যাচের রিঙ্গার ল্যাকটেট ও অন্যান্য স্যালাইন (West Bengal Pharmaceuticals)। বলা হয়েছে এই ব্যাচগুলি প্রত্যাশিত গুণমানের ছিল না এবং জীবাণুমুক্তও নয়।
বাতিলের তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল
সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন বা CDSCO-র রিপোর্টে জানানো হয়েছে, দেশ জুড়ে জানুয়ারি মাসে ১৪৫টি ওষুধের ব্যাচ পরীক্ষা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই পরীক্ষায় তার মধ্যে ৯৩টি ওষুধকে ‘প্রত্যাশিত গুণমানের নয়’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের ল্যাবে। এছাড়াও ৫২টি ওষুধকে ‘প্রত্যাশিত গুণমানের নয়’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে কেন্দ্রের বিভিন্ন ল্যাব থেকে। আর সেই সূত্র ধরেই বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন যে সঠিক গুণমান বজায় না থাকলে এটি রোগী বা চিকিৎসার জন্য ঝুঁকির অন্যতম কারণ হতে পারে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
ঘটনায় ফের চাঙ্গা হল স্যালাইন কাণ্ডের স্মৃতি
গত জানুয়ারি মাসে স্যালাইন এবং অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রীতে জীবাণুমুক্ততার গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি, কারণ এটি সরাসরি রোগীর শরীরে প্রবাহিত হয় এবং যে কোনও ধরনের অবাঞ্ছিত জীবাণু বা সংক্রমণ রোগীর স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। আর তাতেই ফের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্যালাইন কাণ্ডের স্মৃতি জেগে উঠল সকলের মনে। পাঁচ প্রসূতিদের রিঙ্গার ল্যাকটেট নামে নিষিদ্ধ স্যালাইন দেওয়ায় সদ্য মা হওয়া একজন প্রাণ হারান। এবং বাকি চারজন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কলকাতার হাসপাতালে রেফার করা হয়। যার ফলে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আর এই আবহে ফের মুখ পুড়ল পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের।
বাতিল হওয়া ওষুধের তালিকায় রয়েছে হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ব্যবহৃত টেলমিসারটান, এমোক্সিসিলিন ও পটাশিয়াম ক্ল্যাভিউনেট। এছাড়াও তালিকায় রয়েছে প্যারাসিটামল, স্নায়ুরোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ, পেনকিলার, অ্যান্টিবায়োটিক, শিশুদের জন্য ব্যবহৃত সর্দি-কাশির সিরাপও। প্রসঙ্গত, সিডিএসসিও-র কর্মকর্তারা প্রতিমাসে বাজারে উপলব্ধ বিভিন্ন ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেন এবং সেগুলোর গুণমান পর্যালোচনা করেন। সেক্ষেত্রে কোনো ওষুধের গুণমান ঠিক না থাকলে, সংশ্লিষ্ট ব্যাচের ওষুধ বাজার থেকে প্রত্যাহার করা হয়, যাতে জনগণের স্বাস্থ্যের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।