ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যম সপ্তাহ চলছে। এখনও শীত কিন্তু একেবারে চলে যায়নি। সকালের দিকে কিন্তু শীতের বেশ ভালো রকমের অনুভূতি হচ্ছে। দু-তিন ডিগ্রী তাপমাত্রা নেমেও গেছে। সপ্তাহান্তে রয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাসও। আর তাই এখন গায়ে লেপ-কম্বল রাখা না গেলেও একটা হালকা কিছু প্রয়োজন পড়ছে।
শীতে বাঙালি অন্যতম ভরসা লেপ। আগে যখন এত মোটা কম্বলের ব্যবহার ছিল না তখন বাঙালির শীত কাটত হাতে তৈরি তুলোর লেপে। শীত পরা এবং শীত চলে যাওয়ায় সময় সেই লেপ রোদে দেওয়ার এক আলাদাই হিড়িক ছিল বাঙালি বাড়িতে। তবে এখন আর সেই অর্থে ঠান্ডা পড়ে না লেপের ব্যবহার কমেছে কিন্তু বাঙালির সেন্টিমেন্টের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই লেপ। সেই সঙ্গে রয়েছে এক ইতিহাস।
আম মানুষের বাড়িতে থাকা লেপের রং কিন্তু লাল। তার ওপরে অনেকেই অনেক রকমের কভার পড়িয়ে রাখেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গৃহস্থ বাড়িতে লাল রঙের লেপই দেখা যায়। কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন কেন এই লিপির রং লাল হয়? তবে কি এর পিছনে রয়েছে কোনও ইতিহাস?
আসলে এর উত্তর হবে অবশ্যই হ্যাঁ। এর পিছনে রয়েছে এক বড় ইতিহাস। এই লেপ শিল্প একান্তই মুর্শিদাবাদের। লম্বা আঁশের কার্পাস তুলোর বীজ ছাড়িয়ে তা লাল রঙে চুবিয়ে শুকনো খরে ভরা হতো মোলায়েম সিল্ক এবং মখমলের কাপড়ে। সেই মখমলের রঙ হয় লাল। তাতে সুগন্ধের জন্যে ছড়ানো হত আতর। তবে পরবর্তীতে লেপ বানানোর ক্ষেত্রে মখমলের ব্যবহার না হলেও সুতির কাপড়েও লাল রংয়ের প্রথা চলছে।
আজও লেপ বানালে কারিগরেরা লাল রঙের কাপড়েই বানান। মুর্শিদকুলি খাঁর আমল থেকে মখমলের কাপড়ে লেপের ব্যবহার চলছে। মুর্শিদকুলি খাঁর মৃত্যুর পর তার মেয়ের জামাই সুজাউদ্দিন মখমলের পরিবর্তে লেপের কাপড়ে সিল্কের ব্যবহার শুরু করেন। এরপর ক্রমশই কালের নিয়মে কাপড় বদলালেও রং অপরিবর্তিত থেকে যায়।