সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ ভারতীয় রেলের তরফে নেওয়া এক সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। যারা ট্রেনের লোকো পাইলট (Loco Pilot) তাঁরা আগামী দিন থেকে ব্যাপক সমস্যার মুখে পড়তে চলেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আসলে রেলের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, কর্তব্যরত অবস্থায় খাবারের জন্য বিরতি কিংবা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে পারবেন না লোকো পাইলটরা। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন। স্বাভাবিকভাবেই রেলের এহেন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
লোকো পাইলটরা নিতে পারবেন না মিল ব্রেক, বাথরুম ব্রেক
জানা গিয়েছে, ট্রেন চালক ও সহ-চালকদের বিভিন্ন ইস্যুতে ইতিপূর্বে একটি মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করেছিল রেল বোর্ড। এরপর গত ৪ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট কমিটি রেল বোর্ডের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের কমিটির যাবতীয় সুপারিশ মেনে নিয়ে রেলমন্ত্রক সাফ সাফ জানিয়েছে যে, কর্তব্যরত অবস্থায় লোকো পাইলটরা মিল ব্রেক নিতে পারবেন না, এছাড়া নেচারস কল-এ সাড়া দিতে পারবেন না। এদিকে রেলের এহেন সিদ্ধান্তকে ঘিরে রেল কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। রেলের এই ঘোষণাকে ‘অমানবিক’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
আন্দোলনের হুঁশিয়ারি রেল কর্মীদের
অল ইন্ডিয়া লোকো রানিং স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন রেলওয়ে বোর্ডের বহু-বিষয়ক কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গৃহীত সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন বলেছে যে রেলের এই সিদ্ধান্ত অবাস্তব এবং ভিত্তিহীন। AILRSA-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা/চেয়ারম্যান রেলওয়ে বোর্ডের কাছে লেখা এক চিঠিতে, মহাসচিব কেসি জেমস দাবি করেছেন যে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হোক। নইলে ট্রেন চালকদের সংগঠনের তরফ থেকে দেশজুড়ে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
রেল কর্মীদের যুক্তি, বহু চালক এমন রয়েছেন যারা মধুমেহ রোগে আক্রান্ত। তাঁদের ক্ষেত্রে মিল ব্রেক বা বাথরুম ব্রেক ছাড়া ননস্টপ ট্রেন চালানো একপ্রকার অসম্ভব। এছাড়া মহিলা চালকদের তো আরও সমস্যা। এহেন পরিস্থিতিতে রেল বোর্ড এরকম অমানবিক সিদ্ধান্ত কীভাবে নিতে পারে সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
ট্রেনের গতি নিয়েও বিজ্ঞপ্তি জারি রেলের
এই দুইয়ের পাশাপাশি ট্রেনের গতি নিয়েও বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রেল। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৩০ কিলোমিটার গতিতে ছুটে চলা মেল, এক্সপ্রেসগুলিকেই হাইস্পিড হিসেবে ধরতে হবে। আগে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার গতিতে ছুটলেই সংশ্লিষ্ট ট্রেনকে হাইস্পিডের তকমা দেওয়া হতো। প্রতি ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার গতিতে ছুটে চলা ট্রেনের প্রতিটিতেই চালকের পাশাপাশি অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলটকে (এএলপি) দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, ২০০ কিলোমিটার বা তার বেশি দূরত্ব পাড়ি দিলে ‘মেমু’ ট্রেনগুলিতে সহ-চালক রাখতেই হবে।