সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্র এখন চরম সংকটের মধ্য দিয়ে এগোচ্ছে। হাজার হাজার শিক্ষক বর্তমানে নিজের কাজ হারিয়ে অসহায়ে দিন কাটাচ্ছে। পাশাপাশি স্কুলে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক। আর এই আবহে পড়ুয়াদের ভবিষ্যতে প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আর এই সমস্যার সমাধান আনতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল বাংলার মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তাদের দাবি, চাকরিহারাদের আপাতত শিক্ষকতার অনুমতি দেওয়া হোক এই শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
বিতর্কের সূত্রপাত কোথা থেকে?
আসলে ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ (SSC Recruitment Scam) প্যানেল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলে আসছে। এবার নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে আদালত। আর শেষ পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বাতিল হয়ে যায় সম্পূর্ণ প্যানেল। এর ফলে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক কর্মী তাদের চাকরি হারান। কিন্তু এখন স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে, এত শিক্ষক একসঙ্গে স্কুল থেকে চলে গেলে স্কুলগুলো চলবে কীভাবে?
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দাবি
এই বিতর্ককে কেন্দ্র করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে সুপ্রিম কোর্টে দাবি জানানো হয়েছে, যতদিন না নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে, যতদিন অবধি যাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই, তাদের কাজ চালিয়ে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। অন্তত এই শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত পড়ানোর দায়িত্ব দেওয়া হোক।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
পর্ষদ দাবি করছে, ইতিমধ্যেই অনেক স্কুল শিক্ষকের অভাবে ভেঙে পড়েছে। যেমন ২৫ জন শিক্ষকের স্কুলে এখন রয়েছে মাত্র ২ জন শিক্ষক। ফলে পরীক্ষার আয়োজন, পঠনপাঠন, স্কুল পরিচালনা সবই আতঙ্কের মুখে। আর এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাই অবৈধ বলে আদালতে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত না হওয়া শিক্ষকরা যেন এই শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত পড়াতে পারেন, সেই আবেদন সুপ্রিম কোর্টের কাছে রেখেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
এখন নজর সুপ্রিম কোর্টের রায়ের দিকে
সুপ্রিম কোর্ট এই আবেদন গ্রহণ করবে কিনা, বা কবে এই মামলার শুনানি দেবে এবং বিচারপতি কী রায় দেবে এখন সেদিকেই নজর গোটা রাজ্যবাসীর। বিশেষ করে সেই ২৬ হাজার চাকরিহারা শিক্ষক এবং তাদের পরিবার, যারা প্রতিদিন আশায় দিন গুনছেন, হয়তো তারা আবার সেই চাকরি ফিরে পাবেন।
মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস
এই আবেদনের দিন এক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরিহারা যোগ্য প্রার্থীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। তবে এই মুহূর্তে গোটা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা দাঁড়িয়ে রয়েছে এক চরম সংকটের মুখে। চাকরি হারানো হাজার হাজার শিক্ষক মানসিক, আর্থিক সব দিক থেকেই বিপর্যস্ত। অন্যদিকে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। এখন সুপ্রিম কোর্ট আবেদনকে খারিজ করে কিনা সেটাই দেখার।