প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিক্ষোভের প্রারম্ভিক মুহূর্ত তৈরি হয়েছিল এক বছর আগেই। গত বছরের এপ্রিলে যখন এসএসসি (SSC) মামলায় গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশের গোটা প্যানেলই বাতিল করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট তখন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। যদিও সেই সময় সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। কিন্তু ঠিক এক বছরের মাথায় শীর্ষ আদালত কলকাতা হাইকোর্টের সেই রায়ই বজায় রাখল। আর তখনই ক্ষোভে ফেটে পড়েন চাকরিহারারা।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
ফের আন্দোলনের ডাক শিক্ষকদের!
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যোগ্য অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ করার দাবি নিয়ে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেই চলেছে। পুলিশের সাথে শুরু হয় তুমুল বচসা। পুলিশ বারবার সতর্ক করলেও আন্দোলনকারীরা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকেন। শেষে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে তাঁরা এসএসসি ভবন ঘেরাও করেন। দাবি ওঠে শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও এসএসএসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগেরও। আর এই আবহেই নতুন যোগ্য শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ্যে আসতে না আসতেই শুরু হয় নয়া তাণ্ডব। ওএমআর শিটে নম্বরের গণ্ডগোলের দাব নিয়ে করুণাময়ীতে নতুন করে আন্দোলনে বসে শিক্ষকেরা।
কমেছে শিক্ষকদের লোকবল
সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা SSC অফিসের সামনে নতুন করে আন্দোলন শুরু করলেন ‘অযোগ্য’ শিক্ষক প্রার্থীরা। তবে এই আন্দোলনে শিক্ষকদের ভিড় খুব কম দেখা গিয়েছিল। কারণ নতুন যোগ্য শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ্যে আসার পরেই একে একে স্কুলের কাজে ফিরছেন শিক্ষকদের অনেকেই। যার ফলে এসএসসি দফতরের সামনে চতুর্থ দিনে কমতে শুরু করেছে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা। কিন্তু লোকবল কমলেও এখনই আন্দোলন থেকে উঠছে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
নামের তালিকা থেকে বাদ ১৮০৩ জন
আন্দোলনরত চাকরিহারাদের একটাই দাবি, “যেখানে আদালতে ওএমআরে কারচুপির বিষয়টি এখনও প্রমাণিত হয়নি, সেখানে SSC কী করে তাঁদের ‘অযোগ্য’ বলে দাগিয়ে দিয়ে বেতন বন্ধ করে দিতে পারে? আসলে রাজ্যের তরফে ‘অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত’ বা ‘দাগি’ নন, এমন ১৭২০৬ জন শিক্ষকের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছিল। সেই তালিকা সুপ্রিম কোর্টেও জমা দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু গতকাল সেখান থেকে আরও ১৮০৩ জনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র-সহ একাধিক বিষয়ে সমস্যা রয়েছে বলে জানতে পেরেছে পর্ষদ। আর তাতেই আরও ক্ষেপে উঠেছে সকলে।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ দিয়েছে, একমাত্র যোগ্য শিক্ষকেরাই আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন এবং হয় কটা মাস কাজ। করবেন ততদিন বেতন পাবেন। পাশাপাশি তাঁদের ফের নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যোগ দিতে হবে, যে নিয়োগপ্রক্রিয়া চলতি বছরের মধ্যে শেষ করতে বলেছে শীর্ষ আদালত। কিন্তু আন্দোলনের চক্করে এদিকে শিক্ষাকর্মীদের অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিন জন শিক্ষাকর্মী। তবে অসুস্থতা সত্ত্বেও তাঁরা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। এবার দেখার পালা এসএসসি যোগ্য শিক্ষকদের কোনো চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ্যে আনে কিনা।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।