বড় পরিবর্তনের অপেক্ষায় থাকুন বাংলার বেতনভোগী সরকারি কর্মীরা। কারণ জানা গিয়েছে, ১লা এপ্রিল থেকে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেতন এবং সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। আয়কর এবং ভাতা সংক্রান্ত নতুন ঘোষণার ফলে এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বর্তমান বেতন কাঠামো
আসুন রাজ্য সরকারি কর্মচারীর বর্তমান বেতনের একটি বিশ্লেষণ করা যাক। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখার্জির মতে, যদি কোনও রাজ্য সরকারি কর্মচারীর মূল বেতন ৬০,০০০ টাকা হয়, তাহলে তাঁরা মোট কত টাকা পান, তা নিম্নলিখিত:
- ডিএ (মহার্ঘ্য ভাতা): মূল বেতনের ১০%, যা ৬,০০০ টাকা।
- বাড়ি ভাড়া ভাতা (এইচআরএ): মূল বেতনের ১২%, যা ৭,২০০ টাকা।
- মোট মাসিক বেতন: এটি প্রতি মাসে মোট ৭৩,২০০ টাকা দেয়, যা প্রতি বছর ৮,৭৮,৪০০ টাকার সমান।
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সাথে তুলনা
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সাথে তুলনা করলে, তাঁদের বেতন অনেক বেশি। উদাহরণস্বরূপ, যদি একজন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীর মূল বেতন ৬০,০০০ টাকা হয়, তাহলে তাঁরা এগুলিও পান:
- DA: তাঁদের মূল বেতনের ৩০%, যা ৩০,০০০ টাকা।
- বাড়ি ভাড়া ভাতা (HRA): তাঁদের বেতনের ২৭%, যা ১৬,২০০ টাকা।
- যাতায়াত/পরিবহন ভাতা: ৪,৮০০ টাকা।
- মোট বেতন: এর ফলে তাঁদের মোট মাসিক বেতন ১,১১,০০০ টাকায় পৌঁছে যায়।
আয়কর কাঠামোর জন্য রাজ্যের সরকারি কর্মীদের সোনায় সোহাগা
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য বড় খবর হল, কেন্দ্রীয় বাজেটে ঘোষিত নতুন আয়কর কাঠামোর অধীনে, ৬০,০০০ টাকা মূল বেতনের কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা এখন ১২ লক্ষ টাকার বেশি বার্ষিক আয়ের উপর কর দিচ্ছেন। তবে, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা সেই পরিমাণের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারেননি।
কারণ তাঁদের বার্ষিক আয় অনেক কম, প্রায় ৮,৭৮,৪০০ টাকা। বর্তমানে, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ১,২৮,০০০ টাকার বেশি আয়ের উপর আয়কর দিতে হয়। কিন্তু নতুন আয়কর কাঠামোর ফলে, ১লা এপ্রিল থেকে, আশা করা হচ্ছে যে এই কর্মচারীদের আর আয়কর দিতে হবে না, যা তাঁদের জন্য একটি বড় সুবিধা নিয়ে আসবে।
তাহলেও রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা কেন বিরক্ত?
আসলে, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের হতাশার প্রধান কারণ হল তাদের ডিএ (মহার্ঘ্য ভাতা) কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের তুলনায় অনেক কম। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা সপ্তম বেতন কমিশনের অধীনে ৫৩% ডিএ পান, রাজ্যের কর্মচারীরা ষষ্ঠ বেতন কমিশনের অধীনে মাত্র ১৪% ডিএ পান। ভাতার এই পার্থক্য রাজ্যের কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ ক্রমশ বাড়িয়ে তুলছে।